ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে উদ্বেগ জানিয়েছেন বাংলাদেশের ৫৪ বিশিষ্ট নাগরিক। পাশাপাশি ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এবং ভারতের সহযোগিতায় দেশে যে স্বৈরশাসন ও লুটপাট চলে আসছিল, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার কবল থেকে দেশের মানুষ নিজেদের মুক্ত করেছে। স্বৈরশাসনকে পরাজিত করার পর এখন চেষ্টা করা হচ্ছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এবং জাতীয় পুনর্গঠনের পথে যাত্রা শুরু করার। এই সময় অবশ্যই ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতীয় ‘গদি মিডিয়ার’ অপপ্রচার রুখে দিতে হবে।
এতে বলা হয়, ভারত সরকার যখন গণহত্যাকারী পতিত স্বৈরশাসককে নিজেদের আশ্রয়ে রেখেছে, তখন ভারতীয় ‘গদি মিডিয়া’ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ‘কল্পিত ক্র্যাকডাউনের’ গল্প প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। দেখা গেছে, এসব কথিত খবর হয় মিথ্যা, নয়তো বিভ্রান্তিমূলক।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে মিথ্যা তথ্য ও অপতথ্যের উৎপাদনে শীর্ষ একটি দেশ হচ্ছে ভারত এবং তাদের দানবীয় প্রোপাগান্ডা-যন্ত্র এখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘গদি মিডিয়ার’ এই আক্রমণের কারণে জাতি হিসেবে আমরা এখন ভারতের আধিপত্যের বাইরে এসে আমাদের স্বাধীন পথে যাত্রা শুরু করেছি আবার।
বৈচিত্র্যকে বাংলাদেশের মূল শক্তি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে দেশের সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম, সামাজিক ও রাজনৈতিক মতামতের মানুষ একত্র হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এতে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
বিবৃতিতে দেশবাসী ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ৫৪ নাগরিক বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে যে যেখানেই থাকুন না কেন, সবাই বাংলাদেশবিরোধী এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও সামাজিক-রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বাংলাদেশের শক্তি।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক মোস্তফা নাজমুল মানসুর, গীতিকার লতিফুল ইসলাম শিবলী, লেখক ও অধ্যাপক সুমন রহমান, অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান, কবি কাজল শাহনেওয়াজ, লেখক আহমাদ মোস্তফা কামাল, শিক্ষক ও অনুবাদক জি এইচ হাবিব, লেখক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নি, সংস্কৃতিকর্মী বীথি ঘোষ, কবি ও লেখক মৃদুল মাহবুব, লেখক ও অনুবাদক জিয়া হাশান, অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া, প্রকাশক মাহাবুব রাহমান, অধ্যাপক আ আল মামুন, অধ্যাপক আর রাজি, কবি মিছিল খন্দকার, আলতাফ শাহনেওয়াজ।
এ ছাড়াও বিবৃতিতে সই করেছেন পাভেল পার্থ, বখতিয়ার আহমেদ, হাসান আশরাফ, সায়েমা খাতুন, স্বাধীন সেন, সাইমুম পারভেজ, মাহবুব সুমন, ওমর তারেক চৌধুরী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, সুস্মিতা চক্রবর্তী, মোশরেকা অদিতি হক, তুহিন খান, ইসমাইল হোসেন, নাহিদ হাসান, গাজী তানজিয়া, কাজী জেসিন, ফেরদৌস আরা রুমী, শাহতাব সিদ্দিক অনিক, ইমরুল হাসান, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, মারুফ মল্লিক, মিশায়েল আজিজ, সৈয়দ মুনতাসির রিদওয়ান, পারভেজ আলম, আরিফ রহমান, মোহাম্মদ রোমেল, কামরুল আহসান, শরত চৌধুরী, বায়েজিদ বোস্তামি, পার্থিব রাশেদ, কাজী জেসিন, দীপক কুমার গোস্বামী, আবুল কালাম আল আজাদ, আলমগীর স্বপন, সারোয়ার তুষার, এহসান মাহমুদ।
এম.কে
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪