মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় চাল ও কানাডীয় সারসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য আমদানির ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এর ফলে স্পষ্ট হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যচুক্তি এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেনি। আলোচনার বিষয়গুলো এখনও মীমাংসার অপেক্ষায় রয়েছে বলে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স, কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোর আইনপ্রণেতা ও কৃষকদের সঙ্গে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে ট্রাম্প এসব মন্তব্য করেন। বৈঠকে কৃষকেরা তাঁর প্রশাসনের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। সভার আনুষ্ঠানিকতায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার্কিন কৃষকদের জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের একটি নতুন সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
ট্রাম্প জানান, সস্তা আমদানির চাপে দেশীয় উৎপাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, দেশীয় কৃষকদের বাজার সুরক্ষা দিতে আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপই এখন সবচেয়ে কার্যকর উপায়। দাম কমে যাওয়া ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারার জন্য কিছু কৃষক বিদেশি পণ্য আমদানিকেই দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ—ভারত ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলো কৃত্রিমভাবে ফসলের দাম কম রেখে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডাম্পিং’ করছে।
আলোচনার এক পর্যায়ে ট্রাম্প বিশেষভাবে ভারতীয় চালের প্রসঙ্গ তোলেন এবং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় চালের ‘ডাম্পিং’ তিনি বরদাস্ত করবেন না। অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টকে উদ্দেশ করে তিনি জানতে চান, কেন ভারতের এই ধরনের বাজার আচরণ থামানো যাচ্ছে না এবং চাল আমদানিতে কি কোনো শুল্কছাড় রয়েছে। জবাবে বেসেন্ট জানান, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির কাজ এখনো অসম্পূর্ণ।
ট্রাম্প আরও স্পষ্ট করেন, ভারতীয় চালের ‘ডাম্পিং’ তিনি কঠোরভাবে মোকাবিলা করবেন এবং পরিস্থিতি ‘দেখে নেবেন’। এর পাশাপাশি কানাডা থেকে আমদানি করা সারের ক্ষেত্রেও একই ধরনের শুল্ক আরোপের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন তিনি। তাঁর মতে, দেশীয় সার উৎপাদনকে উৎসাহিত করতেই প্রয়োজনে কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ২৫ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন সম্ভাব্য শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ কৃষিপণ্যের বাজারকে সুরক্ষিত করতে পারে, তবে ভারত ও কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা তৈরি হওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়।
সূত্রঃ রয়টার্স\ ব্লুমবার্গ
এম.কে

