TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ভারতের নতুন মাথাব্যথা, চীনের যুদ্ধ বিমানে বাংলার আকাশ রক্ষার পরিকল্পনা

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে চীন থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরকালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিষয়টি উঠে এসেছে। যদিও সরকারি পর্যায়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে চীনের চতুর্থ প্রজন্মের সুপারসনিক মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান জে-১০সি (J-10C) নিয়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে।

জে-১০সি চীনের তৈরি একটি অত্যাধুনিক মাল্টিরোল ফাইটার জেট, যা আকাশ ও ভূমি উভয় লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করতে সক্ষম। এতে উন্নত এভিয়নিক্স, অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে (AESA) রাডার এবং আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে। ঘণ্টায় প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন এই বিমানটি পাকিস্তানের জেএফ-১৭ থান্ডার এবং ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারে। ইতিমধ্যে পাকিস্তান এই বিমান সংগ্রহ করে তার বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী করেছে।

বাংলাদেশের বর্তমান বিমানবাহিনীতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পুরনো প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান রয়েছে, যা আধুনিক যুদ্ধের চাহিদা পূরণে সীমিত সক্ষমতা রাখে। অন্যদিকে, প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের বিমানবাহিনীকে ক্রমাগত আপগ্রেড করছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য জে-১০সি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে, যা আকাশ প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে।

চীন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতের অন্যতম প্রধান সহযোগী। নৌবাহিনীতে সাবমেরিন, স্থলবাহিনীতে ট্যাংক ও আর্টিলারি সরবরাহের পাশাপাশি আকাশ প্রতিরক্ষায়ও চীনের প্রযুক্তি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জে-১০সি ক্রয়ের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও গভীর হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

যদিও সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের জে-১০সি ক্রয়ের খবর নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। চীনের সাথে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির এই উদ্যোগকে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জে-১০সি সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তবে এটি শুধু হার্ডওয়্যার নয়, প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের মতো সফ্টওয়্যার বিষয়েও বিনিয়োগ প্রয়োজন। এছাড়া, আঞ্চলিক শক্তি ভারসাম্য বজায় রাখতে কূটনৈতিক সতর্কতাও জরুরি।

বাংলাদেশের সামরিক আধুনিকায়নে জে-১০সি যুক্ত হলে তা বিমানবাহিনীর জন্য একটি মাইলফলক হবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসায় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। চীন-বাংলাদেশের এই সম্ভাব্য চুক্তি ভবিষ্যতে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এম.কে
০১ এপ্রিল ২০২৫

আরো পড়ুন

শেষ সময়েও বলপ্রয়োগে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশে বসবাসরত ফরাসি নাগরিকদের সতর্ক করল দূতাবাস

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সহিংসতার ছবি-ভিডিও চেয়েছে পুলিশ