গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাতারাতি পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ৫ আগস্টের আগে-পরে বিভিন্ন মাধ্যমে দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেন আওয়ামী সরকারের এমপি-মন্ত্রী-শীর্ষ নেতাসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মীরাও। সরকারের অনুপস্থিতিতে দেশে শুরু হয় নানা সংকট। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতা গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে।
কিছুদিন নীরব থেকে শুরু হয় শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার গুঞ্জন। সময়ে সময়ে নেতাকর্মীরা অজ্ঞাতস্থান থেকে বক্তব্য, সামাজিকমাধ্যমে বিভিন্ন বিবৃতি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে শুরু করেন। এর মাঝে শেখ হাসিনার সঙ্গে কয়েকজন নেতাকর্মীর কলরেকর্ড ফাঁস হলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে শুরু করে।
যদিও এসব কলরেকর্ড আদৌ সত্য না কি এআই জেনারেটেড- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সর্বশেষ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীও হয়তো ভাবছেন, তাদের নেত্রীর দেশে ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা!
কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পুনর্বাসন কি আদৌ সম্ভব? এই অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়টা নিয়ে দিল্লি কী ভাবছে?
শেখ হাসিনার দেশে ফেরার ব্যাপারে এখনই অতটা আগ বাড়িয়ে ভাবতে রাজি নয় ভারত! দেশটি এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি কথাও বলছে না সঙ্গত কারণেই। তবে ঢাকায় ভারতের সাবেক হাই কমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী মনে করেন, এই কাজটা শুধু কঠিন নয়– খুবই কঠিন!
তিনি বলেন, ‘এখনও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সে দেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে, তাদের দলীয় সংগঠনও ছত্রভঙ্গ! শেখ হাসিনার বয়স আজকের চেয়ে দশটা বছর কম হলে তবু হয়তো মনে করা যেত তিনি দেশে ফিরে দলের হাল ধরবেন– কিন্তু এই মুহূর্তে সেটা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।’
সাউথ ব্লকের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার কথায়, ‘পিচ এখনও প্রতিকূল, বল উল্টোপাল্টা লাফাচ্ছে। এরকম সময় চালিয়ে খেলতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।’
ক্রিকেটের উপমা দিয়ে হাসতে হাসতে তিনি বলেন, ‘এখন বরং ধৈর্য দেখানোর সময়, ফলে প্রতিপক্ষের লুজ বলের জন্য অপেক্ষা করাটাই শ্রেয়!’
রাজনীতির উইকেটে পোড় খাওয়া ব্যাটার শেখ হাসিনাও নিশ্চয় এটা জানেন এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত সুযোগ এলে তবেই সেটা কাজে লাগাবেন– ভারতও আপাতত এটুকুতেই তাদের ভাবনা সীমিত রাখছে!
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
২৫ নভেম্বর ২০২৪