ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রায় দেড় লাখ নেতা-কর্মী ও তাদের পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন পার করছেন। ভারতের নতুন অনুপ্রবেশ নীতির আওতায় অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ফলে এই সংকট ঘনীভূত হয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে বহু বাংলাদেশিকে আটক ও পুশব্যাক করা হয়েছে। যদিও এখনো সরাসরি কোনো আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়নি, তবে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের আগস্ট থেকে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ভারত ত্যাগ করে আমেরিকা, ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে এসব দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে যারা এখনো ভারতে রয়েছেন, তারা গভীর দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যারা নাগরিকত্বহীন বা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থান করছেন, তাদের দেশ ত্যাগ করতে হবে। অনেক নেতাকে ব্যক্তিগতভাবে ভিন্নদেশে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, ফলে আওয়ামীলীগ নেতাদের জন্য দেশে ফিরে যাওয়াও এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রীত্বও ভারত সরকারের চাপের মুখে নেতাকর্মীদের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে নেতারা মনে করছেন, দেশে ফিরে গেলে হয়রানি ও গ্রেপ্তারের মুখে পড়তে হবে।
ভারতের নতুন নাগরিকত্ব ও অনুপ্রবেশ আইন অনুযায়ী, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কোনো ধরনের রেহাই দেওয়া হবে না। এতে ভারতের মাটিতে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দোলাচলে পড়ে গেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের পরিণতি এখন দেশের বাইরেও প্রভাব ফেলছে। ভারতের মাটিতে অবস্থানরত এই বিপুলসংখ্যক আওয়ামী কর্মী ও নেতার পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের ভেতরেও নানা ধরনের চাপ ও মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
এম.কে
১৭ মে ২০২৫