মণিপুরে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাতে ব্যর্থ হয়ে বারবার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার, যা কখনো মাসের পর মাস চলতে থাকে। তবে এ সময়ের মধ্যে মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেটের জন্য স্টারলিংক সেবা ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান একাধিক সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তিনি একটি স্টারলিংক ডিভাইসটি ব্যবহার করতে দেখেছেন। এটি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা হয়েছিল।
মণিপুরে কতগুলো সশস্ত্র গোষ্ঠী এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তার কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। কুকি পক্ষের দুটি এবং মেইতেই পক্ষের এক গোষ্ঠী দাবি করেছে, তারা ইন্টারনেট অ্যাকসেস করতে স্টারলিংক ব্যবহার করেনি।
এর আগেও ভারতের ভূখণ্ডে স্টারলিংক ব্যবহার দেখা গেছে। গত ডিসেম্বর মাসে, ভারতীয় কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, তারা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি নৌকায় স্টারলিংক ডিভাইস উদ্ধার করেছে, যা প্রায় তিন বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের মাদকদ্রব্য (মেথঅ্যাম্পিটামিন) পাচারের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ডিভাইসটি নেভিগেশন এবং ইন্টারনেট অ্যাকসেসের জন্য ভারতীয় জলসীমায় ব্যবহার করা হচ্ছিল এবং তারা তদন্তে সহায়তার জন্য স্টারলিংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
রাজ্যের দুটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, মণিপুরের সাধারণ জনগণ এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী অবৈধভাবে ইন্টারনেট অ্যাকসেস করতে স্টারলিংক ডিভাইস ব্যবহার করছে। মণিপুরের এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কিছু এলাকার মধ্যে বিশেষ করে মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি কিছু অঞ্চলে কাজ করে স্টারলিংক। সম্প্রতি উদ্ধার করা স্টারলিংক ডিভাইসটি মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আনা হয়েছে বলে নিরাপত্তাকর্মীরা মনে করছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি স্টারলিংক।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মে মাসে থেকে প্রায় দৈনিক সংঘর্ষ হচ্ছে রাজ্যটিতে, যার ফলে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। উভয় পক্ষেই সশস্ত্র গোষ্ঠী গঠন হয়েছে, যার ফলে রাজ্যটি জাতিগতভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৪ জানুয়ারি ২০২৫