ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া এক আলবেনীয় নাগরিকের আপিল খারিজ করেছে যুক্তরাজ্যের কোর্ট অব আপিল। হোম অফিসের প্রশাসনিক ত্রুটি ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে তিনি “Indefinite Leave to Remain” এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্ব পেলেও, পুরো প্রক্রিয়াতেই তিনি নিজের পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। আদালতের মতে, তার প্রতারণা এবং নাগরিকত্ব লাভের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
মামলাটি Onuzi বনাম Secretary of State for the Home Department [2025] EWCA Civ 1337 শিরোনামে কোর্ট অব আপিল-এ শোনা হয়। আপিলকারী ১৯৯৯ সালের ২৮ নভেম্বর কসোভোর নাগরিক পরিচয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেন, যদিও তিনি প্রকৃতপক্ষে আলবেনীয় ছিলেন। হোম অফিসের একাধিক প্রশাসনিক ব্যর্থতার পর ২০০৬ সালের ১৭ মে তিনি ওই ভুয়া পরিচয়ের ভিত্তিতে অনির্দিষ্ট মেয়াদের থাকার অনুমতি পান।
২০০৭ সালের ২৫ এপ্রিল একই ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে তিনি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অর্জন করেন। নাগরিকত্ব ফরমে “আপনি কি কখনও এমন কিছু করেছেন যা আপনার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলে?”—এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি ‘না’ টিক দেন। তিনি আরও ঘোষণা দেন যে তার দেওয়া সব তথ্য সঠিক এবং মিথ্যা বা গোপন তথ্য দিলে নাগরিকত্ব বাতিল হতে পারে—এ কথাও তিনি বুঝে স্বীকার করেন।
দীর্ঘ বছর পর ২০২০ সালে হোম অফিস আবিষ্কার করে যে তিনি একজন আলবেনীয় নাগরিক। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তিনি প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং অনুরোধ জানান তার স্ত্রী ও তিন ব্রিটিশ সন্তান যুক্তরাজ্যে থাকার কারণে মানবিক বিবেচনা প্রয়োগ করতে। কিন্তু একই বছরের ৪ নভেম্বর হোম অফিস British Nationality Act 1981–এর ধারা ৪০(৩) অনুযায়ী তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়।
প্রথম স্তরের ট্রাইব্যুনাল আবেদনকারীকে কিছুটা সুবিধা দিয়ে বলে যে, হোম অফিসের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও বিলম্বের কারণে তার “Indefinite Leave to Remain” দেওয়া হয়েছিল, তাই ভুয়া পরিচয় নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে ততটা প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু হোম সেক্রেটারি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলে, আপার ট্রাইব্যুনাল তা উল্টে দেয়।
পরবর্তী পর্যায়ে কোর্ট অব আপিল, Chaudhry v Secretary of State for the Home Department [2025] EWCA Civ 16 মামলার দৃষ্টান্ত ধরে রায়ে জানায়—প্রতারণা ও নাগরিকত্ব লাভের মধ্যে “কারণগত সম্পর্ক” স্পষ্ট এবং এই সিদ্ধান্তে কোনো আইনি ত্রুটি নেই।
আদালতের ভাষায়,
“২০০৭ সালে যদি সত্য জানা যেত, তবে আবেদনকারীকে তার চরিত্রগত অযোগ্যতার কারণে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়া হতো না। অন্য কোনো সিদ্ধান্তের বাস্তবসম্ভাবনা ছিল না।”
ফলে আদালত হোম অফিসের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে এবং আপিলটি খারিজ করে দেয়।
সূত্রঃ ফ্রি মুভমেন্ট
এম.কে

