6.4 C
London
January 1, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ভোগান্তি কমাতে বিমানবন্দরে কাস্টমসের ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ সার্ভিস চালু

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রী ভোগান্তি কমাতে প্রথমবারের মতো ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস চালু করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে যারা অনুমোদিত পরিমাণের অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে আসবেন, অর্থাৎ ব্যাগেজ সুবিধার অতিরিক্ত শুল্ক আরোপযোগ্য মালামাল বিমানবন্দর শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে তারা নিতে পারবেন।

পূর্বে যাত্রীর কাছ থেকে আটক করা মালামাল ছাড়করণের যাত্রীকে কাস্টমস হাউজে আসতে হতো, বিচারিক কার্যক্রমের সম্মুখীন হতে হতো এবং সময়ক্ষেপণ হতো। তাদের অনেককে দালালের খপ্পরে পড়তে হতো। এখন সেই সেবা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকেই নিতে পরবেন।

ব্যাগেজের অতিরিক্ত শুল্কারোপযোগ্য পণ্য সাময়িকভাবে আটক করে শুল্ক দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। যাত্রীরা চাইলে বিমানবন্দরেই তৎক্ষণাৎ শুল্ক পরিশোধ করে খালাস করে নিয়ে যেতে পারবেন অথবা পরবর্তী ২১ দিনের মধ্যে সেই পণ্যের শুল্ক পরিশোধ করে বিমানবন্দর থেকেই খালাস নিতে পারবেন।

শাহজালালের ইতিহাসে এ ধরনের উদ্যোগ কোনোদিনই ছিল না। বরং শুল্কায়নযোগ্য পণ্যের টাকা না দিলে সেই পণ্য জব্দ করা হতো। আইনানুযায়ী সেটা চলে যেতো কাস্টমস হাউজ ঢাকার বিচার শাখায়। পরবর্তীতে বিচার শাখাতে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পণ্যের শুল্কের পাশাপাশি বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ হতো। অর্থাৎ জব্দ করা মালামাল পেতে গ্রাহকের অনেক ঝামেলা পোহাতে হতো।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাস্টমসের এই উদ্যোগ যাত্রীবান্ধব এবং যুক্তিসঙ্গত। এতে পণ্যের মালিক যেমন ঝামেলা এড়াতে পারবেন, তেমনি সঠিক সময়ে তিনি তার পণ্যও পাবেন।

ঢাকা কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার কেফায়েত উল্লাহ মজুমদার বলেন, কাস্টমসের ইতিহাসে এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত প্রবাসী কিংবা অন্য যাত্রীদের জন্য একটি সুসংবাদ। শুল্কায়নে পণ্যের অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে না। বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। নির্ধারিত ২১ দিনের মধ্যে যখন তার টাকার সংকুলান হবে তখন তিনি তার পণ্য পাবেন।

ডেপুটি কমিশনার মো. ইফতেখার আলম ভূঁইয়া বলেন যে, দেখা যাচ্ছে একজন সম্মানিত প্রবাসী না জেনে শুল্কায়নযোগ্য পণ্য নিয়ে এলেন এবং অনেক সময় তার নিকট পর্যাপ্ত নগদ টাকা থাকে না। তখন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সেই পণ্য জব্দ (ডিএম) করে দেয়, যা বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে যায়। এরপর তিনি যখন ওই পণ্য নিতে আসেন তখন তাকে বিচারিক প্রক্রিয়াসহ আরও জটিলতর কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। এমনকি তাকে মাঝে মাঝেই ঐ পণ্যের জন্যে বিপুল জরিমানা পর্যন্ত গুনতে হয়। কিন্তু এখন আর সেটি করতে হবে না। যাত্রীর নিকট যে জব্দের কাগজটি থাকবে সেটি দেখিয়ে ২১ দিনের মধ্যে তিনি প্রযোজ্য শুল্ক করাদি পরিশোধ সাপেক্ষে জব্দকৃত পণ‍্যাদি খালাস করে করে নিতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, প্রকৃত যাত্রীরা যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। তবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোন পণ্য আনা হলে সেই যাত্রীগন কাস্টমসের ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস সুবিধা পাবেন না।

আলাউদ্দিন আল আজাদ নামে এক যাত্রী বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে আমরা হয়রানি থেকে বাঁচবো আশা করছি। অতিরিক্ত টাকাও দিতে হচ্ছে না, আবার জরিমানা থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে। সামগ্রিকভাবে আমাদের মতো যারা প্রকৃত যাত্রী, তারা লাভবান হবে। তবে এখন এই সিদ্ধান্তটি খুবই ভালো হয়েছে। জব্দের মেমো দিয়ে নির্ধারিত শুল্ক দিয়ে সহজেই পণ্য বের করা যাবে।

এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোবারা খানম বলেন, বর্তমান সময়ে উন্নত যাত্রীসেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে আমাদের রাজস্ব কমবে না। রাজস্ব ঠিকই থাকবে। সেবার মানটা আরও উন্নত হবে।

তিনি বলেন, আগে যেমন তাদের সমস্যা হতো এই সমস্যা আর হবে না। আমাদের চিন্তা– সবার আগে যাত্রী সেবা। যাত্রীদের আর কাস্টমস হাউজে এসে সময় নষ্ট করতে হবে না। শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বিমানবন্দর থেকেই খালাসের মাধ্যমে তাদের ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে যাবে।

এম.কে
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

বদলে যাচ্ছে দেশের সব টেলিফোন নাম্বার

অনলাইন ডেস্ক

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা আইন বাতিল হচ্ছে

পুতুল নয়, সরাসরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে চায় সরকার