এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী হয়েছে চীন, যেখানে এক ২৯ বছর বয়সী যুবক মাতাল অবস্থায় একটি ধাতব চামচ গিলে ফেলেন এবং পাঁচ মাস পর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন যে ঘটনাটি কল্পনা নয়, বরং ভয়ংকর বাস্তব।
ভুক্তভোগী যুবক ইয়ান, জুন মাসে সাংহাইয়ের ঝোংশান হাসপাতালে যান। তিনি সন্দেহ করছিলেন, কোনোভাবে খাবারের সঙ্গে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলেছেন। চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে এক্স-রে এবং এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে চমকে ওঠেন। তার দেহে প্লাস্টিক নয়, বরং ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা একটি ধাতব চামচ আটকে রয়েছে—যা ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ, অর্থাৎ ডুওডেনামে অবস্থান করছিল।
চামচটি এমন এক বিপজ্জনক জায়গায় আটকে ছিল যে সামান্য নড়াচড়াতেও তা অন্ত্রে ছিদ্র সৃষ্টি করতে পারত। এর ফলে হতে পারত মারাত্মক অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বা সংক্রমণ, যা সরাসরি জীবন বিপন্ন করতে পারত।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটি ছিল অত্যন্ত জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ একটি অবস্থা। তবে সৌভাগ্যক্রমে চামচটি দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে থাকলেও তা গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করেনি। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চামচটি নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হয়।
চামচ আবিষ্কারের পর ইয়ান স্মরণ করেন, জানুয়ারিতে থাইল্যান্ড সফরের সময় এক রাত্রি মাতাল অবস্থায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পার্টি করার সময় এমন কিছু ঘটেছিল বলে তার মনে হচ্ছিল। তবে তখন সেটিকে স্বপ্ন বা কল্পনা বলে ভেবেছিলেন তিনি। পাঁচ মাস পর সেই “দুঃস্বপ্ন” যে বাস্তব ছিল, তা জানার পর তিনি নিজেই স্তব্ধ হয়ে যান।
চিকিৎসকরা বলেন, মানুষের দেহে বিদেশি বস্তু ঢুকে গেলে তা দীর্ঘ সময় ধরে থেকে গেলে পচন, সংক্রমণ, কিংবা রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করতে পারে। ইয়ানের ক্ষেত্রে এটি ছিল এক অলৌকিক রক্ষা।
চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ব্যবহারকারীরা একে ‘মাতাল ভুলের ভয়ানক উদাহরণ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন এবং কেউ কেউ এটিকে সতর্কবার্তা হিসেবেও দেখছেন।
চিকিৎসকেরা সকলকে সতর্ক করে বলেছেন, মদ্যপ অবস্থায় নিজস্ব বোধশক্তি হারিয়ে গিয়ে এমন বিপজ্জনক কাজ অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কারও যদি মনে হয় কিছু গিলে ফেলেছেন বা শরীরে কিছু অস্বাভাবিকতা অনুভব করছেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
সূত্রঃ সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
এম.কে
৩০ জুন ২০২৫