10.8 C
London
October 25, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকবাংলাদেশ

মার্কিন আদালতে এক বাংলাদেশিকে ২২ কোটি টাকা জরিমানা

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই দশক ধরে অবৈধভাবে বসবাস করায় এক বাংলাদেশি প্রবাসীর বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের সিভিল জরিমানা আরোপ করেছে মার্কিন আদালত। জরিমানার পরিমাণ ১৮ লাখ ২০ হাজার ৩৫২ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকা (১ ডলার = ১২৫ টাকা হিসাবে)।

২০০৫ সালে ইমিগ্রেশন কেস প্রত্যাখ্যান হওয়ার পরও মার্কিন মুলুকে অবস্থান অব্যাহত রাখায় এই জরিমানা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। নিউ ইয়র্কের কুইন্স এলাকার এস্টোরিয়ায় বসবাসকারী এই বাংলাদেশি, যাকে প্রতিবেদনে ছদ্মনামে ‘আরিফুল’ বলা হচ্ছে, সম্প্রতি আদালতের এই নির্দেশনার চিঠি হাতে পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

আদালত ৩০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে জরিমানার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে, তার দেশে ফেরত পাঠানোর আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

২০০৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন ইমিগ্রেশন আদালত তার বিরুদ্ধে কেস রিমুভালের আদেশ দেয়। এরপর আপিল করলেও ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সেই আপিলও খারিজ হয়ে যায়। আরিফুল এরপর আর কেস রিওপেন করতে পারেননি এবং দেশের ফেরার আদেশ উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস চালিয়ে যান।

বিশেষ করে পরিবারে ছোট সন্তান থাকার কারণে মানবিক বিবেচনায় হয়তো তখন প্রশাসন কঠোর হয়নি। এদিকে তার স্ত্রী ও সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও পেয়ে যান।

এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপ করেন। বিভিন্ন ফেডারেল সংস্থা অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় নিউ ইয়র্কের ২৬ ফেডারেল প্লাজায় অবস্থিত আদালত আরিফুলের বিরুদ্ধে এই দীর্ঘমেয়াদি জরিমানার নির্দেশ দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসন আইনজীবী মঈন চৌধুরী জানান, ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ১৯৯৬ সালের সংশোধনী অনুযায়ী এই জরিমানা করা হয়েছে। তার মতে, আইন আগেও ছিল, তবে বাস্তবায়ন হয়নি। এখন ট্রাম্প প্রশাসন একে কার্যকরভাবে প্রয়োগ করছে।

মঈন চৌধুরী আরও জানান, জরিমানার টাকা পরিশোধ না করলে সরকারের পক্ষে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করাও সম্ভব। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আরিফুল যদি সময়মতো আত্মপক্ষ সমর্থনের আবেদন করেন, তবে আদালত কিছুটা নমনীয় হতে পারে।

যেহেতু আরিফুলের স্ত্রী ও সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তাদের অবস্থানে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে আরিফুলের নিজ অবস্থান এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে।

মঈন চৌধুরীর মতে, মানবিক গ্রাউন্ডে জরিমানার বিরুদ্ধে সরকারের কাছে আবেদন করা যেতে পারে। কিন্তু আবেদন নামঞ্জুর হলে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা প্রবল।

এই নজিরবিহীন ঘটনা প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর। অভিবাসন নীতির নতুন বাস্তবতায় এমন শাস্তি হয়তো অন্যদেরও সতর্ক বার্তা হিসেবে কাজ করবে।

এম.কে
২০ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

জাপানে জন্মহার বাড়াতে তরুণদের উৎসাহ দিতে ব্যর্থ সরকার

বাংলাদেশে ধানের তুষ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে ভোজ্য তেল

বাংলাদেশি নাগরিকদের থাইল্যান্ড ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক