মালয়েশিয়ার প্রবীণ বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমকে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দেশটির দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তিনি। তবে এর জন্য তাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
গত শনিবার মালয়েশিয়ার নির্বাচনে আনোয়ার বা সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন কেউই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেননি। যার কারণে তৈরি করা হয় ঝুলন্ত সংসদ। তবে অন্যদের তুলনায় নির্বাচনে এগিয়ে ছিলেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
১৯৯০ এর দশকে আনোয়ার ইব্রাহিমের নাম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার তালিকায় শুরুতে থাকলেও তাকে বরখাস্ত করে জেলে পাঠানো হয়।
তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন ছাত্র আন্দোলনকারী হিসেবে। তিনি ১৯৭১ সালে মুসলিম ইয়্যুথ মুভমেন্ট অব মালয়েশিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামের দারিদ্র্য এবং আর্থসামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনে অংশ নেন তিনি।
তার কর্মকাণ্ড তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের চোখে পড়লে তাকে ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অরগানাইজেশনে (ইউএনএমও) যোগ দিতে বলেন।
দ্রুতই আনোয়ারের উত্থান ঘটে। তিনি অর্থমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হন। ক্যারিশম্যাটিক, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং সংস্কারমনা হওয়ায় তিনি বেশ খ্যাতি অর্জন করেন।
এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়ে এলে মাহাথির তাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নেন।
১৯৯৮ সালে আনোয়ারের ওপর দুর্নীতি ও সমকামিতার অভিযোগ আনা হয় এবং বরখাস্ত করা হয়। হাজার হাজার মানুষ কুয়ালামপুরের সড়কে নেমে আসেন। পরে আনোয়ার গ্রেপ্তার হন। পরে ২০০৪ সালে তিনি মুক্ত হলেও সমকামিতার অভিযোগের পুরোনো আন্দোলন পুনরায় গতি পায়।
২০১৮ সালে একেবারে ক্ষমা পাওয়া এবং মুক্ত হওয়ার আগে তাকে ১০ বছরের মতো জেল খাটতে হয়।
এরপর পাকাতান হারাপান জোটের ব্যানারে তিনি আবারও মাহাথিরের সঙ্গে যোগ দেন। মাহাথির তার আশ্বাসে নড়বড় হয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে মালয়-মুসলিম কনজারভেশনের চাপ এবং অন্তর্দ্বন্দ্বে পাকাতান হারাপান সরকার ভেঙে পড়ে। এতে আনোয়ারের শীর্ষে যাওয়ার পথ আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
২৪ নভেম্বর ২০২২
নিউজ ডেস্ক