যুক্তরাজ্য মেধাবী গবেষক, উদ্ভাবক, প্রকৌশলী ও সৃজনশীল পেশাজীবীদের আকৃষ্ট করতে ৫৪ মিলিয়ন পাউন্ডের ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট ফান্ড’ এবং একটি নতুন টাস্কফোর্স চালু করেছে। উদ্যোগটির লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে প্রতিভাবানদের যুক্তরাজ্যে এনে উদ্ভাবনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দেশটির অবস্থান আরও মজবুত করা।
২০২৫ সাল থেকে কার্যকর হওয়া এ তহবিল আগামী পাঁচ বছর স্থানান্তর ও গবেষণার খরচ বহন করবে। তহবিলটি পরিচালনা করবে ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (UKRI)। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং চ্যান্সেলর রাচেল রিভসকে সরাসরি রিপোর্ট করবে টাস্কফোর্সটি।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বিভাগ (DSIT) বলছে, এই কৌশলের মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রতিভা গ্রহণ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে যোগ্য পেশাজীবীরা এই প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাজ্যে কাজ ও বসবাসের সুযোগ পাবেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব পিটার কাইল বলেন, “মেধার কোনো সীমান্ত নেই, এবং যুক্তরাজ্যে রয়েছে সেই মেধার বিকাশের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও আন্তর্জাতিক সংযোগ।”
বাণিজ্য বিষয়ক সেক্রেটারি জোনাথন রেনল্ডস জানান, এই টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে ব্রিটেন বিশ্বসেরা প্রতিভাদের কাছে নিজেদের প্রথম গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরছে।
বাংলাদেশিদের জন্য ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা’ হতে পারে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের একটি সম্ভাবনাময় পথ। এই ভিসার জন্য চাকরির অফার বাধ্যতামূলক নয়, বরং আবেদনকারীর মেধা, পেশাগত স্বীকৃতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়।
ভিসার জন্য আবেদনকারীকে প্রথমে অনুমোদিত সংস্থার কাছ থেকে প্রত্যয়ন (Endorsement) পেতে হবে। বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও মেডিসিনের জন্য রয়্যাল সোসাইটি, ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি বা ইউকেআরআই; আর্টসের জন্য আর্টস কাউন্সিল ইংল্যান্ড; ডিজিটাল টেকনোলজির জন্য টেক ন্যাশনের মতো সংস্থাগুলো প্রত্যয়ন দেয়।
প্রত্যয়নের জন্য প্রয়োজন হয় হালনাগাদ সিভি, অন্তত তিনটি সুপারিশপত্র এবং পেশাগত স্বীকৃতির প্রমাণ। এরপর তিন মাসের মধ্যে ভিসা আবেদন করতে হয়, যা জমা দিতে হয় অনলাইনে। ঢাকাসহ দেশের নির্ধারিত ভিসা সেন্টারে বায়োমেট্রিক ও ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়।
এই ভিসার সুবিধা হলো ইংরেজি ভাষার পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা নেই এবং পরিবারসহ আবেদন করা যায়। তবে প্রতিযোগিতা কঠিন, তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই বৈশ্বিক প্রতিভা আকর্ষণে সক্রিয়। ইউনিভার্সিটিজ ইউকে-এর প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, এই তহবিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা আরও বাড়াবে।
ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, এই নতুন উদ্যোগ উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি অভিবাসন ব্যবস্থায় ভারসাম্য আনবে। বাংলাদেশের প্রতিভাবান তরুণদের জন্য এটি হতে পারে যুক্তরাজ্যে একটি নতুন শুরু।
সূত্রঃ টেক নেশন
এম.কে
২৫ জুন ২০২৫