যুক্তরাজ্যে নয়া ব্রিটিশ আইন কার্যকর হলে চ্যানেল জুড়ে ছোট নৌকায় আগত আশ্রয়প্রার্থীদের প্রবেশে বাধা দেয়া সম্ভব হবে৷ এই বিলটি ইতিমধ্যে বুধবার সংসদের নিম্নকক্ষে অনুমোদন পেয়েছে৷
এ বিষয়ে বিক্ষুব্ধ রক্ষণশীলদের থেকে বেশ কয়েকটি সংশোধনী গ্রহণ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। ছোট ছোট নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার অভিবাসীর অনিয়মিত পথে ব্রিটেনে আসা ঠেকাতে যুক্তরাজ্য সরকার এক বিতর্কিত এই আইনের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল।
ছোট নৌকায় অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমন বন্ধ করাকে পাঁচটি প্রধান অগ্রাধিকারের মধ্যে একটি বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক৷ অবৈধ অভিবাসন বিলের অর্থ হলো, ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে এসে পৌঁছালে তাকে আশ্রয়ের দাবি থেকে বিরত রাখা হবে৷ তাদের নিজের দেশে বা তথাকথিত নিরাপদ তৃতীয় দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
হাউস অফ কমন্স বিলটি ২৮৯-এর মধ্যে ২৩০টি ভোট পেয়েছে। এটি এখন হাউস অফ লর্ডসে গিয়েছে, যেখানে বিলটি সংশোধন করা হতে পারে বা বিলম্বিত করা যেতে পারে।
ভোটের আগে পার্লামেন্টে অভিবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেন, “অবৈধ অভিবাসন আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থার অখণ্ডতায় বাধা দিচ্ছে। তাই নৌকায় করে এখানে আসা বন্ধ করতে চাই৷ আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করতে চাই। এই বিলটি সেই লক্ষ্য নিয়েই আনা হয়েছে।
এনজিও এবং অলাভজনক সংস্থাগুলি বলেছে এর ফলে হাজার হাজার প্রকৃত শরণার্থীর আবেদনকে অপরাধমূলক প্রচেষ্টা হিসাবে দাগিয়ে দেয়া যেতে পারে।
সরকার তার নিজস্ব কিছু আইনপ্রণেতাকে সন্তুষ্ট করার পরিকল্পনায় বেশ কিছু সংশোধনী পেশ করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম৷ এই বিলে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে সঙ্গীহীন শিশুদের ডিপোর্ট করা যেতে পারে৷ যদিও আশ্রয়প্রার্থীদের ব্রিটেনে পৌঁছানোর জন্য ” নিরাপদ ও আইনি পথ” নির্ধারণ করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে এই বিলে।
কিন্তু অন্যান্য সরকারি সংশোধনী আইনটিকে আরো কঠোর করেছে৷ সরকারি সিদ্ধান্তকে বাতিল করার ক্ষেত্রে আদালতের ক্ষমতাকেও সীমিত করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য৷ তবে আদালতের দৃষ্টিতে যদি প্রমাণিত হয়, ওই অনিয়মিত অভিবাসী মারাত্মক ঝুঁকিতে আছেন, বা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন, সেক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তকে আটকে দিতে পারবে আদালত৷
অভিবাসীদের আশ্রয় কাঠামোতে প্রবেশ করার পরিবর্তে ফৌজদারি আইনের অধীন রাখা হবে। যার ফলে তাদের আটক করা যেতে পারে৷ তাদের নিজ দেশে বা নিরাপদ তৃতীয় দেশে পাঠানো হতে পারে এবং যুক্তরাজ্যে পুনরায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে।
কেউ অনিয়মিতভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন প্রমাণ পেলে তার নাগরিকত্ব পাওয়া বা ভবিষ্যতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের পথও রূদ্ধ হয়ে যাবে।
২০২২ সালে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ ডিঙি এবং অন্যান্য ছোট নৌকায় ব্রিটেনে পৌঁছেছিল, যে সংখ্যাটা ২০২০ সালে ছিল আট হাজার ৫০০৷