যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ব্রেক্সিটের প্রভাব নিয়ে এবার স্পষ্ট ও তীব্র মন্তব্য করলেন চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার রেচেল রিভস। বার্মিংহামে আয়োজিত রিজিওনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিটে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্রেক্সিট, মিতব্যয়ী নীতি (austerity) ও মূলধনী ব্যয় হ্রাস—এই তিনটি সিদ্ধান্ত মিলেই যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে এমন গভীর ক্ষত তৈরি করেছে, যা পূর্ববর্তী সব পূর্বাভাসের চেয়েও ভয়াবহ।
রিভস বলেন, “ব্রেক্সিট শুধু একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল না — এটি আমাদের অর্থনীতির ওপর এমন এক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ক্ষতি এখন সমালোচকদের আশঙ্কারও বহু গুণ বেশি স্পষ্ট।” তিনি আরও যোগ করেন, “OBR তাদের পরবর্তী প্রতিবেদনে এই বাস্তবতা খোলাখুলি তুলে ধরবে। আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি যে মাত্রায় ধীর হয়ে পড়েছে, তা আংশিকভাবে হলেও ব্রেক্সিটের ভুল সিদ্ধান্তের ফল।”
তবে তিনি শুধু সমালোচনাতেই থেমে থাকেননি। রিভস জোর দিয়ে বলেন, অতীতের ভুল ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে না। “আমরা পুরনো ধারা বদলাচ্ছি, পরিকল্পনা ব্যবস্থাকে সংস্কার করছি, এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে মূলধন বিনিয়োগ বাড়াচ্ছি,” — বলেন তিনি। “আমার লক্ষ্য স্পষ্ট — ব্রিটেনকে স্থবিরতা থেকে টেনে এনে নতুন প্রবৃদ্ধির পথে নেওয়া।”
রিভস আরও ইঙ্গিত দেন, লেবার সরকার এখন নির্দ্বিধায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন করছে, যাতে ব্যবসা ও বাণিজ্যের ওপর ব্রেক্সিট-পরবর্তী অপ্রয়োজনীয় বাধা দূর হয়। “২০১৬ সালের পর থেকে ব্রিটিশ ব্যবসাগুলোকে অযথা ব্যয়ের ভার বহন করতে হয়েছে। আমরা সেই অকারণ ক্ষতির অবসান ঘটাতে চাই,” — বলেন তিনি।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রিভসের এই বক্তব্য শুধু ব্রেক্সিট-পরবর্তী অর্থনৈতিক বাস্তবতার স্বীকারোক্তি নয়, বরং এটি লেবার সরকারের ভবিষ্যৎ নীতিগত অবস্থানের ইঙ্গিতও বহন করছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রেক্সিট ইস্যুতে সাবধানী অবস্থানে থাকা লেবার নেতারা এখন ক্রমেই খোলামেলা সমালোচনায় ফিরছেন, যা ব্রিটিশ রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূচনা করতে পারে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে