প্রাক্তন হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল ও সুয়েলা ব্র্যাভারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ১৬০০ জন ব্যক্তি যারা মানব পাচারকারী দল ও ড্রাগ স্মাগলিং গ্রুপ কর্তৃক নানাভাবে অত্যাচারের শিকার হয়েছিল। এই সকল ব্যক্তিদের কেইস যাতে লিভ টু রিমেইন না পায় এরজন্য সাবেক হোম সেক্রেটারিদ্বয় গোপন নীতিমালা দ্বারা কেইস সমূহ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টের একটি ল্যান্ডমার্ক রায়ের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে, এই সকল অত্যাচারিত আশ্রয় প্রার্থীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেওয়া উচিত।
গত বুধবার এক শুনানিতে, হোম অফিসকে অবৈধভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দেয়ার কারণে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নিগৃহীত আশ্রয়প্রার্থীদের স্যোশাল বেনিফিট প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা কাজের অনুমতি না দেয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২২ বছর বয়সী এক যুবক বর্তমানে দাতব্য সংস্থার অধীনে রয়েছে। সে জানায় আলবেনিয়ায় পাচারকারীদের দ্বারা সে নিগৃহীত হয়েছিল। তাকে মাদক বিক্রি করতে বাধ্য করা হতো পরে বহু কষ্টে সেখান থেকে সে পালিয়ে ইউকেতে প্রবেশ করে। কিন্তু এই যুবককে হোম অফিসের গোপন নীতিমালার কারণে লিভ টু রিমেইন দিতে প্রায় ১৮ মাস দেরি করে হোমঅফিস।
আদালতের কাছে লিখিতভাবে যুক্তি পেশ করেন স্বরাষ্ট্রসচিব। তারা যুক্তি হিসাবে দেখান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ থাকাতেই এই দীর্ঘসূত্রতা। হোম অফিসের আইনজীবী কেসি ক্যাথ্রিন ম্যাকগাহ আদালতকে জানান, এই সময়ক্ষেপণের জন্য কোনো গোপন বা অপ্রকাশিত নীতি জড়িত নয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের কাছে প্রমাণ স্বরূপ হোম অফিসের কিছু নথি আসে। গার্ডিয়ান জানায় এই ধরনের সকল মামলা আটকে রাখার জন্য নথিতে উল্লেখ রয়েছে।
নথির একটি নোটে আরও যোগ করা হয়েছে ৬৩ টি জুডিশিয়াল রিভিউ এখন পর্যন্ত ৯৬ টি প্রাক-অ্যাকশন প্রোটোকল চিঠির সাথে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও হোম অফিস দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে যেখানে সত্যিকারের মানব পাচারকারী বা মাদক ব্যবসায়ী কর্তৃক নির্যাতিতদের মানবাধিকার প্রদান করা হোম অফিসের কর্তব্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২২ বছর বয়সী যুবকের আইনজীবী ক্রিস বাটলার কেসি বুধবার আদালতকে বলেছেন, “একটি অপ্রকাশিত নীতি পরিচালনা করা অবশ্যই বেআইনী। যা জনসাধারণের নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”
উল্লেখ্য যে, যুক্তরাজ্যের নেট মাইগ্রেশনের কারণে যুক্তরাজ্যের কনজার্ভেটিভ সরকার নানামুখী চাপের মধ্যে রয়েছেন। তাছাড়া বিভিন্ন কারণে ও নিজেদের ব্যর্থতায় ইতিমধ্যে একের অধিক স্বরাষ্ট্রসচিব নিজেদের পদও হারিয়েছেন।
এম.কে
০২ ডিসেম্বর ২০২৩