যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের ব্লেইনাউ গুয়েন্ট কাউন্টির অভিভাবকদের বলা হয়েছে, যদি তাদের সন্তান টয়লেট ট্রেনিং প্রাপ্ত না থাকে, তবে তাদের স্কুলে এসে সন্তানদের ডায়াপার পরিবর্তন করতে হবে।
ব্লেইনাউ গুয়েন্ট কাউন্সিলের নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে শিক্ষকরা আর কোনো শিশুর ডায়াপার পরিবর্তন করবেন না।
কাউন্সিল বলেছে, ” সন্তানকে টয়লেট ট্রেনিং করানো পিতামাতার দায়িত্ব। তবে স্কুল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, উচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী ডায়াপার পরে স্কুলে আসছে। তাই আমরা এই নীতি চালু করেছি।
নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে যে পিতামাতাদের স্কুলে গিয়ে তাদের সন্তানের ডায়াপার বা পুল-আপ পরিবর্তন করতে হবে। এই নীতিমালা চিকিৎসাগত স্বীকৃত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, যদি এর উপযুক্ত প্রমাণ দেওয়া হয়।”
কাউন্সিল আরও জানিয়েছে, তারা পিতামাতাদের সহায়তা এবং পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
বিবিসি প্রথম এই নীতিমালা রিপোর্ট করে, যা শিক্ষক ইউনিয়নগুলোর সমর্থন পেয়েছে। তারা বলেছে, শিশুরা যেন স্কুলে শিখতে প্রস্তুত হয়ে আসে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
স্কুল লিডারদের ইউনিয়ন NAHT Cymru-এর জাতীয় সচিব লরা ডোয়েল বলেছেন, ” শিশুরা তাদের প্রাথমিক মাইলফলকগুলো অর্জন করে এবং স্কুলে শিখতে প্রস্তুত হয়ে আসে, এটি গুরুত্বপূর্ণ।
একটি শিশুর জীবনের প্রথম দিকের বছরগুলো তাদের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জীবনে যারা জড়িত, তারা যেন তাদের উন্নতিতে সহায়তা করে, তা অত্যন্ত জরুরি।
কিছু স্কুল প্রধান জানিয়েছেন একটি বিশাল সংখ্যক শিশু টয়লেট ট্রেইনড থাকে না যা তাদের শিক্ষা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
শিশুদের টয়লেট ট্রেনিং এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করা দাতব্য সংস্থা Kindred2-এর একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে প্রতি চারজন শিশুর মধ্যে একজন টয়লেট ট্রেনিং পায়নি। এছাড়া ৫০% পিতামাতা মনে করেন তাদের সন্তানকে টয়লেট ট্রেনিং দেওয়ার পুরো দায়িত্ব বিদ্যালয়ের।
ERIC (শিশুদের অন্ত্র ও মূত্র সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা)-এর সিইও জুলিয়েট রেইনার বলেন, ” আমরা দেখছি পিতামাতাদের সমালোচনা করে নানা প্রতিবেদন আসছে, কিন্তু এই প্রতিক্রিয়াগুলো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছে: যখন সমস্যাগুলো ঘটে, তখন পিতামাতাদের সহায়তা পাওয়ার সুযোগ অনেক কম।
টয়লেট ট্রেনিং এখন আগের প্রজন্মের তুলনায় আরও কঠিন হয়ে গেছে, কারণ সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয় পরিবারগুলোকে প্রভাবিত করছে।
স্বাস্থ্য পরিদর্শনে পরিবর্তন এবং কর্মীর সংখ্যার হ্রাসের কারণে পিতামাতারা যে সাহায্য এবং পরামর্শ পেতে পারতেন, তা এখন আর সহজলভ্য নয়।
মহামারীর প্রভাব এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেবা কাটছাঁটের কারণে এই সমস্যাগুলো বেড়েছে। যদি শিগগিরই এটি সমাধান করা না হয়, তবে এটি শিশুদের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শিক্ষায়ও গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৯ জানুয়ারি ২০২৫