পূর্বের ব্যাকলগটি ক্লিয়ার করার জন্য ঋষি সুনাকের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও ২০২২ সালের আগে থেকে সৃষ্ট হাজার হাজার আশ্রয় অ্যাপ্লিকেশনগুলির বিষয়ে হোম অফিস এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
২০২২ সালের জুনের আগে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ৯২,০০০ মামলা সমাপ্তিতে সহায়তা করার জন্য কেস ওয়ার্কারদের আর্থিক উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। যদিও সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতি হতে জানা যায় আগের ৪,৫০০ মামলারই এখনও পূণঃতদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
হোম অফিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সরকার প্রসেসিং দ্রুত করার জন্য নতুন ১,২০০ কেইস ওয়ার্কার মোতায়েন করেছে। যার ফলে ৮৬,৮০০ টি মামলারভসিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ২০২৩ সালের শেষের দিকে অবশিষ্ট ব্যাকলগটি ক্লিয়ার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ব্যাকলগটিতে ২৮ শে জুন ২০২২ এর আগে আশ্রয় দাবি করা ব্যক্তিদের ৯২,০০০ এরও বেশি মামলা ছিল যা প্রাথমিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল।
সোমবার হোম অফিসের এক বিবৃতিতে বলে, “ যদিও সমস্ত মামলা পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে ১,১২,০০০ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তথাপি ৪,৫০০ টি জটিল মামলার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। এই কঠিন মামলাগুলি সাধারণত শিশু হিসাবে উপস্থাপিত আশ্রয়প্রার্থীদের সাথে সম্পর্কিত – যেখানে বয়স যাচাইকরণ করা হচ্ছে। তাছাড়া গুরুতর চিকিৎসা সমস্যা বা সন্দেহভাজন অতীতের দোষী ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এমন কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো প্রমাণ হলে আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় পাওয়া আর ইউকেতে সম্ভব হবে না।”
যদিও হোম অফিস একটি বিবৃতিতে জানায়, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দেওয়া ওয়াদা পরিপূর্ণ হয়েছে। অনেক মামলাই সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। তবে একটি কনজারভেটিভ সূত্র জানিয়েছে, হোম অফিসের ব্যাকলগ ক্লিন হয়ে যাওয়া ও প্রধানমন্ত্রীর দাবিপূরণ নিয়ে বক্তব্য সঠিক নয়। মামলার ভাড়ে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে হোম অফিস।
শরণার্থী কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী এনভার সলোমন বলেছেন, “ সরকারের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে লিগ্যাসি ব্যাকলগটি পরিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু দাবিটি বিভ্রান্তিকর। কারণ হাজার হাজার লোক এখনও সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে তাছাড়া রুয়ান্ডা নীতি নিয়ে জল্পনাকল্পনা সিস্টেমকে ধীর করে ফেলেছে। হোম অফিস এমন অনেক লোকের ট্র্যাক হারিয়ে ফেলেছে যাদের আশ্রয় প্রক্রিয়া কেইস চালু ছিল।
উল্লেখ্য যে আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য কাজ করা কেস ওয়ার্কারদের বোনাসগুলি সরকার কর্তৃক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত নভেম্বরে, যদি কোনো কেস ওয়ার্কার একটি ক্যালেন্ডার মাসে তিনটি অতিরিক্ত শিফট সম্পন্ন করেন তবে তারা প্রথম শিফটের জন্য ৭৫ পাউন্ড দ্বিতীয়টির জন্য ১০০ পাউন্ড এবং তৃতীয়টির জন্য ১২৫ পাউন্ড পেয়েছেন। তথাপি এখনও আশ্রয় প্রার্থীদের কেইস শেষ করতে গতি আসে নাই।
উল্লেখ্য যে, ডিসেম্বর মাসেও হোম অফিস দুটি সাপ্তাহিক ছুটির জন্য ওভারটাইম রেট দ্বিগুণ করেছিল যাতে সরকারের দেয়া লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞরা ধারনা করছেন, কেস ওয়ার্কারদের অভিজ্ঞতার অভাবই বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যার কারণে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ওয়াদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে হোম অফিস।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০২ জানুয়ারি ২০২৩