যুক্তরাজ্যে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কারণে চাকরি ছাড়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। তরুণ ও অপেক্ষাকৃত বয়সী দুই ক্ষেত্রের নাগরিকদের মধ্যেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে অসুস্থতার কারণে চাকরি ছাড়ার হার তিন দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা রেজল্যুশন ফাউন্ডেশন।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে স্বাস্থ্যগত কারণে অর্থনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় জনগোষ্ঠী ছিল ২১ লাখ। চার বছরের ব্যবধানে ২০২৩ সালের অক্টোবরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ লাখে। দেশটিতে ১৯৯৪-১৯৯৮ সালের পর এটিই নিষ্ক্রিয়তায় দীর্ঘতম স্থায়ী বৃদ্ধির রেকর্ড।
ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, অসুস্থতাজনিত চাকরি ছাড়ার এ সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক বাজেটের অধীনে ৩ লাখের বেশি কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) সম্প্রতি জানিয়েছিল, দেশটির এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি কর্মক্ষম মানুষ কাজ খুঁজছে না। অন্যদিকে রেজল্যুশন ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণ বা অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সী দুই ধরনের মানুষের মধ্যেই নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে। তাদের মধ্যে অসুস্থতার কারণে কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের অনুপাত সবচেয়ে বেশি।
রেজল্যুশন ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ লুইস মারফি বলেন, ‘সামগ্রিক অর্থনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য দায়ী প্রতি দশজনের মধ্যে নয়জন অল্পবয়সী ও প্রবীণ। এটি ব্যক্তির জীবনযাত্রার মান ও কর্মজীবন উভয় ক্ষেত্রেই গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।’
ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, কভিড-১৯ মহামারী শুরুর আগে থেকে যুক্তরাজ্যে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা মূলত শুরু হয়েছিল। যা ২০১৯ সালের গ্রীষ্ম থেকে ৫৪ মাস ধরে চলেছে। ২০২৩ সালের শেষের দিকে নিষ্ক্রিয়তার সংখ্যা কিছুটা নিম্নগামী হয়েছিল, ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ। এর আগে অসুস্থতার কারণে অর্থনৈতিক কাজে নিষ্ক্রিয়তা বৃদ্ধির দীর্ঘতম রেকর্ড ছিল ১৯৯৪-৯৮ সালে, তখন টানা ৫৫ মাস এ প্রবণতা দেখা গিয়েছিল।
ওএনএসের পরিসংখ্যানের পাশাপাশি ফাউন্ডেশন ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনের (ডিডব্লিউপি) পরিসংখ্যানও কাজে অক্ষমতাজনিত সুবিধা দাবি করার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। সংস্থাটি বলছে, সবচেয়ে বেশি দাবির মধ্যে রয়েছে পারসোনাল ইনডিপেনডেন্স পেমেন্ট (পিআইপি) সুবিধা ও স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নন-মিনস টেস্টেড সুবিধা। এ দাবিগুলো ২০২০-২৪ সাল পর্যন্ত ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। ১৬-১৭ বয়সীদের মধ্যে নতুন পিআইপির দাবি ১৩৮ শতাংশ বেড়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৭ মার্চ ২০২৪