8.7 C
London
December 2, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে আবারও পাঁচ দিনের ধর্মঘটে রেসিডেন্ট ডাক্তাররা

যুক্তরাজ্যে রেসিডেন্ট ডাক্তারদের নতুন পাঁচ দিনের ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চেয়ারম্যান ড. টম ডলফিন। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, তার রাজনৈতিক অতীত বা এমপি হওয়ার আগ্রহের সঙ্গে ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি কেবল চিকিৎসকদের ন্যায্য দাবি তুলে ধরছেন।

 

বিএমএ ঘোষণা করেছে, রেসিডেন্ট ডাক্তাররা ১৭ ডিসেম্বর সকাল ৭টা থেকে ২২ ডিসেম্বর সকাল ৭টা পর্যন্ত টানা পাঁচ দিনের ধর্মঘটে যাবেন। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে এটি হবে চিকিৎসকদের ১৪তম ধর্মঘট। গত মাসের অনুরূপ ধর্মঘটের পরই সতর্ক করা হয়েছিল যে এ আন্দোলন অব্যাহত থাকলে এনএইচএসকে সেবার পরিধি কমাতে হতে পারে।

ধর্মঘটের সময় নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং। তিনি এটিকে “ক্রিসমাস নষ্ট করার নিন্দনীয় চেষ্টা” বলে মন্তব্য করেছেন। এনএইচএস ইংল্যান্ডের আঞ্চলিক মেডিক্যাল ডিরেক্টর ড. ক্রিস স্ট্রিদারও ধর্মঘটকে “অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে আখ্যা দিয়েছেন, কারণ এতে কর্মপরিবেশে রেসিডেন্ট ডাক্তারদের প্রতি সহকর্মীদের সহানুভূতি কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

অন্যদিকে ড. টম ডলফিন বিবিসি রেডিও ৪–এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সঙ্গে ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি আগে লেবার এমপি ডন বাটলারের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন এবং ২০২৪ সালে প্রার্থী হতে আবেদন করেছিলেন, তবে তিনি বলেন, “আমি এখানে একটি ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধি হিসেবে আছি। ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগঠন, এবং সেটাই আমার মূল দায়িত্ব।”

তিনি জানান, রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ন্যায্য প্রশিক্ষণ, বিশেষজ্ঞ হওয়ার সুযোগ এবং ন্যায্য বেতন বৃদ্ধির দাবি বহুদিনের। সরকার তাদের এসব সুযোগ দিচ্ছে না বলেই তারা ধর্মঘটে বাধ্য হচ্ছেন। গত তিন বছরে রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বেতন প্রায় ৩০% বেড়েছে, যদিও বিএমএ দাবি করছে ২০০৮ সাল থেকে প্রকৃত বেতনের যে পতন হয়েছে তা পূরণে আরও ২৬% বৃদ্ধি প্রয়োজন।

ডলফিন আরও বলেন, এ বছর ১০ হাজার ট্রেনিং পোস্টের বিপরীতে আবেদন করেছেন প্রায় ৩০ হাজার ডাক্তার, ফলে বিপুল সংখ্যক যুক্তরাজ্যে শিক্ষিত ডাক্তার সুযোগ পাচ্ছেন না। তার মতে, ভবিষ্যতে ব্রিটিশ মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েটদেরই অগ্রাধিকার দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত।

এদিকে স্বাস্থ্য সচিব অভিযোগ করেছেন, দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়ে বিএমএ কোনো আলোচনায় না এসেই ধর্মঘটের হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, “এই ধর্মঘটের কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। ডাক্তারদের উচিত নয় নিজেদের ‘ক্রিসমাস নষ্টকারী’ গ্রিঞ্চে পরিণত করা।”

ধর্মঘটকে ঘিরে সরকার ও চিকিৎসকদের মধ্যকার উত্তেজনা আবারও বাড়ছে। তবে বিএমএ-এর অবস্থান স্পষ্ট—এটি রাজনৈতিক এজেন্ডা নয়, বরং ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

ব্রিটেনে একদিনে কোভিড সনাক্ত ২৪ হাজার, মৃত্যু ৬৫

সরকার ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের বিদেশি ‘মাইগ্রান্ট হাবে’ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে

লন্ডনে পূণরায় মেয়র নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সাদিক খান

নিউজ ডেস্ক