আশ্রয় নীতিতে ইভেট কুপারের একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। সাবেক কনজারভেটিভ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড সতর্ক করেছেন, এভাবে তাড়াহুড়ো করলে আবারও ‘উইন্ডরাশ ধরণের’ কেলেঙ্কারি ঘটতে পারে।
কুপার গত ৪৮ ঘণ্টায় কয়েকটি কঠিন নীতি ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ২০২৬ সাল
পর্যন্ত শরণার্থীদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আসা নিষিদ্ধ করা, আশ্রয় প্রত্যাখ্যাতদের আপিল প্রক্রিয়ায় আদালতের বদলে সাধারণ নাগরিকের প্যানেল গঠন, এবং হোটেলের পরিবর্তে শিল্প এলাকা বা গুদামঘরে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার পরিকল্পনা।
এই পদক্ষেপগুলো এমন এক সময় এসেছে যখন রিফর্ম ইউকে বারবার সংবাদ সম্মেলনে ছোট নৌকায় রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসন দেখিয়ে সরকারকে চাপের মুখে ফেলছিল। কুপারের হঠাৎ কার্যক্রম অনেকের কাছে ‘হুড়োহুড়ি’ হিসেবেই দেখা দিচ্ছে।
অ্যাম্বার রাড বলেন, “হোম অফিসকে সবসময় তাড়া দিতে গিয়ে উইন্ডরাশের মতো ভুল হয়েছিল। অতিরিক্ত দ্রুত কাজ করলে ভুল হবেই।” উল্লেখ্য, উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারিতে হাজার হাজার মানুষকে বেআইনি অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে চাকরি, ভাতা ও ঘরবাড়ি হারাতে হয়েছিল; অনেকে নির্বাসিতও হয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারও অভিবাসন কমাতে ডিজিটাল পরিচয়পত্র চালুর কথা বিবেচনা করছেন। পাশাপাশি তিনি সামাজিক মাধ্যমে কড়া বার্তা ছড়াচ্ছেন—“আপনি বেআইনিভাবে এলে আটক ও ফেরত পাঠানো হবে।” এর ফলে কুপারের মানবিক বার্তাকে দুর্বল করে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন শরণার্থী অধিকারকর্মীরা।
হোম অফিস প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে, আইনগত অনুমতি না থাকলে দেশ ছাড়তে হবে। একই সঙ্গে কর্মস্থলে অবৈধ শ্রমিক ধরতে অভিযানও জোরদার হয়েছে। এসব পদক্ষেপ ২০১৩ সালের কনজারভেটিভ সরকারের বিতর্কিত ‘গো হোম’ ভ্যানের স্মৃতি ফিরিয়ে দিচ্ছে।
তবে রাড স্বীকার করেন, বর্তমান পরিস্থিতি তার সময়ের তুলনায় অনেক ভিন্ন। “তখন বছরে মাত্র ৩০০ জন চ্যানেল পার হতো। এখন তা বিশাল এক মানবপাচার শিল্পে রূপ নিয়েছে।”
শরণার্থী কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী এনভার সলোমন মনে করেন, কুপার নিয়ন্ত্রণ ও মানবিকতার ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছেন। তবে স্টার্মারের বার্তাগুলো জনমনে কঠোর ‘শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশ’-এর ছাপ তৈরি করছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫