যুক্তরাজ্যের সরকারি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এক মিলিয়নের বেশি বিদেশী নাগরিক বেনিফিট দাবি করছেন।
কর্ম ও পেনশন বিভাগের (ডিডব্লিউপি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে কমপক্ষে ৭.৫ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি ইউনিভার্সেল ক্রেডিট পেয়েছে বিদেশী নাগরিক দাবিদার পরিবার।
বিদেশী নাগরিকরা আই,এল,আর মঞ্জুর হলে এবং স্থায়ী বা শরণার্থী মর্যাদা পাওয়ার পরে ব্রিটিশ নাগরিকদের মতো একই শর্তে ইউনিভার্সেল ক্রেডিট এবং অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠেন। ১০ বছর ধরে জাতীয় বীমা প্রদানের পরে, তারা রাষ্ট্রীয় পেনশনেরও অধিকারী হন।
সেন্টার ফর মাইগ্রেশন কন্ট্রোল (সিএমসি) এর বিশ্লেষণে দেখা গেছে – কঙ্গোলিজ, ইরাকি এবং আফগানরা– ব্রিটিশ জনগণের চেয়ে চারগুণ হারে বেশি সুবিধা দাবি করছে।
যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এই ব্যবস্থাকে “অস্থিতিশীল, অপ্রতিরোধ্য এবং অন্যায্য” বলে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু পরিকল্পিত সংস্কারের আহবান জানানোতে তার প্রধানমন্ত্রীত্বের বিরাট সমালোচনার মুখে পড়েছে।
সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ (সিপিএস) এর একটি পৃথক বিশ্লেষণ অনুসারে, আগামী দশকে ৮,০০,০০০ বিদেশী নাগরিক যুক্তরাজ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার ভিসা পাবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। যার ফলে সরকারের সম্ভাব্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টি প্রস্তাব করেছে বেকার এবং কম বেতনভোগী অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। তারা আরও জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যে আসা যে কেউ আই,এল,আর আবেদন করার জন্য সময়কাল পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা উচিত।
ছায়া স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস ফিলপ বলেন, ” বিদেশী নাগরিকদের জন্য বেনিফিট বিলটি অগ্রহণযোগ্য এবং বিস্ময়কর। এটা অনৈতিক যে ব্রিটিশ করদাতারা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জন্য বেশি কর দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে যে কম বেতনের অভিবাসীদের জন্য ব্রিটিশ করদাতাদের অর্থ ব্যয় হয়। এই কারণেই গণ অভিবাসনের যুগের অবসান ঘটাতে হবে।”
করোনা মহামারীর পর থেকে ডিডব্লিউপি পরিসংখ্যান আপডেট করেনি বলে জানা যায়। তবে সিএমসি অনুমান করেছে বিদেশী নাগরিকদের বেনিফিটের দাবি একই হারে অব্যাহত থাকলে আরও ১,৬৮,০০০ বেনিফিট দাবিদার যুক্ত হবে সিস্টেমে।
২০০টি দেশের জাতীয়তার মধ্যে, পোল্যান্ডের বেনিফিট দাবিদার সবচেয়ে বেশি ছিল ৮৯,০৪০ জন। এরপর পাকিস্তান (৮৫,৮৮১), বাংলাদেশ (৫৪,৫৮৯), রোমানিয়া (৪৫,৭২৭), ভারত (৩৩,৫৬১), পর্তুগাল (৩২,০৬৩), নাইজেরিয়া (২৩,৬২৭) এবং আয়ারল্যান্ড (১৭,৯৩৩)।
২৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তির জন্য প্রতি মাসে গড়ে ৩৯৩.৪৫ পাউন্ডের ইউনিভার্সাল ক্রেডিট বেনিফিট দাবি করা হয়। সিপিএস-এর তথ্য অনুসারে যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডের বাইরে অন্যান্য দেশের দাবিদার পরিবারকে ইউনিভার্সেল ক্রেডিট হিসেবে ৭.৬ বিলিয়ন পাউন্ড প্রদান করা হয়েছে।
ডিডব্লিউপি বলেছে ইউনিভার্সেল ক্রেডিট একটি পারিবারিক সুবিধা তাই অনেকেই এর দাবিদার হিসাবে আবেদন করে থাকে।
সিপিএস-এর গবেষণা পরিচালক কার্ল উইলিয়ামস বলেছেন, “আমাদের আরও অনেক বেশি অভিবাসন ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থা অভিবাসীদের বেনিফিট আবেদনে অগ্রাধিকার প্রদান করে যার ফলে উল্লেখযোগ্য হারে অবদানকারী বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
সূত্রঃ সিএমসি
এম.কে
২৫ মার্চ ২০২৫