এনএইচএস (NHS) একটি বিরল কিন্তু গুরুতর ধরণের ক্যান্সারের সূক্ষ্ম লক্ষণগুলি প্রকাশ করেছে। এই লক্ষণগুলোর অনেককেই সহজে উপেক্ষা করা যেতে পারে এবং যখন তা ধরা পড়ে, তখন অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে এনএইচএস।
এনএইচএস-এর মতে, যুক্তরাজ্যে পেটের ক্যান্সার খুব সাধারণ নয়। এর উপসর্গগুলো সহজেই অন্য কোনো সমস্যার সাথে মিশে যেতে পারে, কিন্তু চিকিৎসকের কাছে চেকআপ করালে ক্যান্সার শনাক্ত হলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পেটের ক্যান্সারের কিছু “খুব সূক্ষ্ম” লক্ষণ রয়েছে, যা প্রধানত খাবার হজমের ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে রয়েছে:
বুকজ্বালা বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স
খাবার গিলতে সমস্যা (ডিসফ্যাজিয়া)
বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
বদহজমের লক্ষণ, যেমন অতিরিক্ত ঢেকুর ওঠা, যা সহজে সারে না
অল্প খাবারেই পেট ভরে যাওয়া
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অন্যান্য লক্ষণও দেখা যেতে পারে, যেমন ক্ষুধা কমে যাওয়া, অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস, পেটে সাধারণ ব্যথা বা পেটের ওপরের অংশে একটি গুটি অনুভব করা। এই লক্ষণগুলোর কোনো একটি থাকলেই ক্যান্সার হয়েছে বলা যাবে না, তবে নিরাপত্তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
এনএইচএস-এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে: “যদি আপনার গ্যাস্ট্রো-ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) বা অন্য কোনো সমস্যা থাকে, তবে আপনি এই ধরনের লক্ষণ নিয়মিত পেতে পারেন।” তারা আরও যোগ করেছে: “আপনি হয়তো এই লক্ষণগুলোর সাথে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। তবে আপনার লক্ষণ যদি পরিবর্তিত হয়, খারাপ হয়, বা স্বাভাবিক মনে না হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।”
আপনার যদি খাবার গিলতে সমস্যা হয়, পেটে গুটি অনুভূত হয়, বা অনেক ওজন কমে যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে দেখা করা জরুরি। এছাড়া, যদি অন্য কোনো লক্ষণ তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা খারাপ হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কারা বেশি ঝুঁকিতে?
পেটের ক্যান্সার, যা গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার নামেও পরিচিত, সাধারণত বয়স্কদের এবং বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে, কম বয়সীদের এবং নারীদের ক্ষেত্রেও এটি হতে পারে। এটি তুলনামূলকভাবে বিরল ক্যান্সার, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগটি উন্নত পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত লক্ষণ দেখা যায় না।
অন্যান্য লক্ষণ:
বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া
ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য
রক্তযুক্ত বা কালো মল
বমিতে রক্ত আসা
পেটে পানি জমে যাওয়া (অ্যাবডোমিনাল ফ্লুইড বিল্ডআপ)
যদি লক্ষণগুলো দুই থেকে তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা আরও খারাপ হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ঝুঁকি কমানোর উপায়
ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। Cancer Research UK-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৫% পেটের ক্যান্সার অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার কারণে হয়ে থাকে।
প্রায় ৪০% ক্যান্সার স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। কম চর্বিযুক্ত, উচ্চ ফাইবারযুক্ত এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস ক্যান্সারসহ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
Cancer Research UK বলছে, এমন কোনো নির্দিষ্ট ডায়েট নেই যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে, তবে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে ঝুঁকি অনেকাংশে কমতে পারে।
সূত্রঃ মিরর
এম.কে
০৭ মার্চ ২০২৫