6.5 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষেত্রে শোষণের শিকার অভিবাসী কর্মীরা

যুক্তরাজ্যে অভিবাসী কর্মী নিয়োগের অনুমতি পাওয়া অন্তত ১৭৭টি সামাজিক পরিচর্যা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বা কেয়ার ফার্মের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও শ্রম শোষণের অভিযোগ উঠেছে৷

অভিবাসী কর্মীদের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল এই খাতটিতে মজুরি তুলনামূলক কম৷ কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, তারপরও শোষণের শিকার হচ্ছেন এই খাতে কর্মরত অভিবাসীরা৷

এই খাতের অবস্থা নিয়ে গবেষণা করেছে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক রাইটস সেন্টার৷ তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডের ১৭৭টি কেয়ার ফার্মের কাছে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ দেয়ার স্পন্সরশিপ লাইসেন্স বা যথাযথ অনুমতি ছিল৷ কিন্তু রেকর্ড বলছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে এর আগেও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে৷

ভায়োলেশন ট্র্যাকার ইউকে অব এমপ্লয়মেন্ট ট্রাইব্যুনালের গবেষকদের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই ফার্মগুলো ২০২০ সালে থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ২৫০ বার শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছে৷ এগুলোর মধ্যে আছে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতি, বেতন কেটে রাখা, বৈষম্য, শ্রমঘণ্টার চেয়ে বেশি কাজ করানোর পরও ন্যূনতম মজুরি না দেয়া৷

এসব প্রতিষ্ঠানগুলো এই সময়কালে ২২৫টি মামলায় হেরে গেছে৷ কর্মীদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে ফার্মগুলোকে সবমিলিয়ে ৬০ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেছে আদালত৷

ব্রেক্সিটের পর এসব ফার্ম যাতে আমলাতান্ত্রিক ও ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা এড়িয়ে অভিবাসী কর্মীদের সহজে নিয়োগ দিতে পারে সেজন্য স্পন্সরশিপ লাইসেন্স দেয় যুক্তরাজ্য সরকার৷ কিন্তু এমন ব্যবস্থার কারণে কর্মক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করে আসছিলো অধিকার সংস্থা এবং শিক্ষাবিদেরা৷

শ্রম শোষণ বিষয়ক তদন্তকারী সংস্থা গ্যাংমাস্টারস অ্যান্ড লেবার অ্যাবিউস অথরিটি জানিয়েছে, দেশটিতে আধুনিক দাসত্ব, ঋণে জর্জরিত হওয়া এবং অর্থনৈতিকভাবে শোষণের ঘটনাগুলো বেড়েই চলেছে৷

ওয়ার্ক রাইটস সেন্টারের সিইও ডোরা-অলিভিয়া ভিকোল বলেছেন, ক্ষমতার এই ভারসাম্যহীনতা ‘‘কেয়ার ফার্মগুলোকে অভিবাসী কর্মীদের শোষণে উত্সাহ যোগাচ্ছে৷ কর্মীদের অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না৷ কারণ, যিনি মুখ খুলবেন তাকে চাকরিচ্যুত বা ভিসা বাতিলের হুমকি দেয়া হতে পারে৷’’

ব্রিটেনে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেখা-শোনা, যত্ন-আত্তির জন্য পরিচর্যা কর্মীদের চাহিদা বাড়ছে৷ আর দেশটিতে পরিচর্যা কর্মীদের এক-তৃতীয়াংশ অভিবাসী৷

ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আসার পর ২০২১ সালে হাজারো শূন্যপদ পূরণে বিশেষ ভিসা চালু করে যুক্তরাজ্য৷ ওই ভিসার আওতায় ভারত, নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, ফিলিপাইন্সের অনেক নাগরিক পরিচর্যা কর্মী হিসাবে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান৷

গবেষণায় যুক্তরাজ্যে শ্রম আইন লঙ্ঘনের ছোট একটি দিক তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন গবেষকেরা৷ তারা বলছেন, এর পরিধি আরো বিস্তৃত হতে পারে, অন্যান্য খাতগুলোতেও এমন ঘটনা অমূলক নয়৷

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা হোম অফিস চলতি বছর এক হাজারেরও বেশি কোম্পানির অভিবাসী কর্মী নিয়োগ দেয়ার স্পন্সরশিপ লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করেছে৷

সূত্রঃ ওয়ার্ক রাইটস সেন্টার

এম.কে
১৫ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

বন্ধ হচ্ছে বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার

ব্রিটিশ পাসপোর্টের আবেদন খরচ বৃদ্ধি করল যুক্তরাজ্য সরকার

যুক্তরাজ্য কি এবার লকডাউন এড়াতে পারবে?

অনলাইন ডেস্ক