TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় সিগন্যাল সংকট দূর করতে ভার্জিন মিডিয়া (O2)আনছে স্যাটেলাইট সংযোগ

যুক্তরাজ্যে গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলের সিগন্যাল সংকট দূর করতে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে ভার্জিন মিডিয়া ওটু (Virgin Media O2)। প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রথম মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর হিসেবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় সংযোগ প্রদান করতে যাচ্ছে, যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ওটু জানিয়েছে, তাদের নতুন সেবা ‘ওটু স্যাটেলাইট (O2 Satellite)’ ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে চালু হবে। এই সেবা বাস্তবায়নে তারা যুক্ত হয়েছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত স্যাটেলাইট কোম্পানি স্টারলিংকের (Starlink) সঙ্গে। ব্যবহারকারীদের জন্য এটি একটি ঐচ্ছিক বা পেইড সার্ভিস হবে, যার জন্য মাসিক অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করা হবে।

প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা এমন এলাকায়, যেখানে স্থলভিত্তিক মোবাইল নেটওয়ার্কের কাভারেজ নেই, সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্যাটেলাইট সংযোগ পাবেন। তবে শুরুতে এই সেবার মাধ্যমে ফোন কল করা সম্ভব হবে না। এটি শুধুমাত্র মেসেজিং, ম্যাপস ও লোকেশন অ্যাপস-এর ক্ষেত্রে কার্যকর থাকবে।

ওটু জানিয়েছে, বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটগুলো ভয়েস কল সমর্থন করে না, তবে ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মের স্যাটেলাইটে সেই সুবিধা যোগ হবে। পরীক্ষামূলকভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মতো ডেটাভিত্তিক কলিং অ্যাপ ব্যবহার করে কল চালু করার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষক সিসিএস ইনসাইটের লুক পিয়ার্স বলেন, “আজকের বিশ্বে সংযোগ আর বিলাসিতা নয়, এটি অপরিহার্য। জীবনরক্ষাকারী জরুরি পরিস্থিতি থেকে শুরু করে সফটওয়্যার নির্ভর গাড়িকে অনলাইনে রাখার জন্য স্থায়ী সংযোগ এখন মানুষের মৌলিক প্রত্যাশা।” তার মতে, স্যাটেলাইট প্রযুক্তিই একমাত্র সমাধান যা পাহাড়, দ্বীপ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের কাভারেজ ঘাটতি পূরণ করতে পারে।

ওটুর এই পদক্ষেপটি আসে প্রতিদ্বন্দ্বী ভোডাফোনের স্যাটেলাইট ভিডিও কল পরীক্ষার কয়েক মাস পর। ভোডাফোন সম্প্রতি ওয়েলসের একটি পাহাড় থেকে সফলভাবে স্যাটেলাইট সংযোগে লাইভ ভিডিও কল সম্পন্ন করেছে। তারা AST নামের স্যাটেলাইট কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে, যার বর্তমানে ছয়টি স্যাটেলাইট কক্ষপথে রয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ৬০টি পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

অন্যদিকে, স্টারলিংকের ইতিমধ্যে ৬৫০টিরও বেশি স্যাটেলাইট সক্রিয় রয়েছে। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জাপানে একই ধরনের সেবা চালু করেছে, যা যুক্তরাজ্যের স্যাটেলাইট সংযোগ যুগের সূচনা আরও বাস্তবসম্মত করে তুলেছে।

সম্প্রতি Ofcom যুক্তরাজ্যে নতুন নীতিমালা অনুমোদন করেছে, যাতে স্যাটেলাইট সংযোগ সরাসরি স্মার্টফোনে ব্যবহার করা সম্ভব হয়। বর্তমানে এটি কেবল জরুরি বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ, তবে ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ যোগাযোগ সেবার পথ উন্মুক্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যদিও এই উদ্যোগে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, কিছু জ্যোতির্বিজ্ঞানী লো-আর্থ অরবিট স্যাটেলাইটের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এসব স্যাটেলাইট রাতের আকাশ দূষিত করে এবং সম্ভাব্য মহাজাগতিক বিপদ যেমন গ্রহাণু শনাক্ত করতে বাধা সৃষ্টি করে।

তবু প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, স্যাটেলাইটভিত্তিক সংযোগই ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু হবে, যেখানে পৃথিবীর প্রতিটি কোণেই মানুষ থাকবে সংযুক্ত — আক্ষরিক অর্থেই “আকাশপথে সংযোগিত বিশ্ব।”

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে

আরো পড়ুন

গাঁজাসেবনকারীদের গ্রেফতার নয়, সংশোধন চান সাদিক খান

অনলাইন ডেস্ক

টাওয়ার হ্যামলেটসে মাতৃভাষা শিক্ষায় বাংলা টিউটর নিয়োগ, প্রতি ঘণ্টায় বেতন £৩৬.৭৮ পর্যন্ত

নিউজ ডেস্ক

আমার মেয়েই তাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেঃ ঋষি সুনাকের শাশুড়ি