লেবার সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী, ছোট নির্মাণ প্রকল্পে বায়োডাইভার্সিটি নেট গেইন নিয়ম শিথিল করা হলে আগামী এক দশকে ইয়র্কশায়ার ডেলসের সমান জমিতে প্রকৃতি ধ্বংসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যেসব প্রকল্প এক হেক্টরের কম জমিতে নির্মিত হবে, সেগুলোর জন্য প্রকৃতি ধ্বংসের প্রতিপূরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে প্রতি বছর অনুমোদিত ৭৯,৩০০ প্রকল্পের মধ্যে ৯৭% এই নিয়মের বাইরে চলে যাবে।
পরিবেশ অর্থনীতিবিদ সংস্থা ইফটেক-এর বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এতে ২,১৫,০০০ হেক্টর জমি প্রাকৃতিক ক্ষতিপূরণ ছাড়াই নির্মাণে ব্যবহৃত হবে, যা দেশের প্রকৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বড় প্রকল্পে এবং এপ্রিল থেকে ছোট প্রকল্পে বায়োডাইভার্সিটির ১০% বৃদ্ধি বাধ্যতামূলক হলেও, গত এক বছরে ৮৬% নির্মাণ প্রকল্প নিয়মের বাইরে থাকতে ‘ছাড়’ দাবি করেছে।
‘ডি মিনিমিস’ ছাড়ের অপব্যবহার করে বড় বড় প্রকল্পও নিয়মকে ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্মাতারা নিজেরাই এই ছাড় দাবি করতে পারায় নিয়ম কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড কাউন্ট্রিসাইড লিংক-এর রিচার্ড বেনওয়েল বলেন, “এই প্রস্তাব প্রকৃতি বিনাশের যুগে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত। এতে বেসরকারি খাতে প্রকৃতি রক্ষায় বিনিয়োগের আস্থা ধ্বংস হবে।”
ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্টস-এর জোয়ান এডওয়ার্ডস বলেছেন, “সরকার পরিবেশ রক্ষা ও প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগ আহ্বান করলেও নিয়ম বারবার পাল্টে পরিবেশের বাজারকেই ধ্বংস করছে। লেবার সরকারের এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী।”
ইফটেক-এর প্রস্তাব, এক হেক্টরের বদলে ০.১ হেক্টরের নিচের প্রকল্পেই সীমিত ছাড় দেওয়া হোক, যাতে বড় প্রকল্প ফাঁকি দিতে না পারে।
সরকার দাবি করছে, নিয়মকে আরও সহজ, দ্রুত ও কম ব্যয়বহুল করার পথ খোঁজা হচ্ছে। ২৪ জুলাই পর্যন্ত চলছে এই প্রস্তাবের ওপর জনমত গ্রহণ।
বিশেষজ্ঞ রবার্ট ওটস বলেন, “মাত্র ১৩ মাস আগে যে নিয়ম চালু হয়েছে, তা বাতিলের প্রস্তাব উন্নয়ন খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। প্রকৃতি রক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১০ জুলাই ২০২৫