যুক্তরাজ্যে জন্মহার আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন। তিনি বলেছেন, সরকার এমন একটি সমাজ গঠনে কাজ করছে, যেখানে তরুণ-তরুণীরা পরিবার শুরু করতে অনুপ্রাণিত হবে এবং সেই সুযোগ ও সহায়তা পাবে।
২০২৩ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রত্যেক মহিলার গড় সন্তান সংখ্যা নেমে এসেছে ১.৪৪-এ, যা ১৯৩৮ সালের পর সর্বনিম্ন। এই হার জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় গড় ২.১-এর চেয়ে অনেক নিচে। একইসঙ্গে ২০২৩ সালে শিশু জন্মের সংখ্যা ছিল ১৯৭৭ সালের পর সবচেয়ে কম।
এই প্রেক্ষাপটে ব্রিজেট ফিলিপসন একটি পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলেন, সমাজে এই ধারা ভবিষ্যতে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে এবং এটি বহু পরিবারের ভেঙে পড়া স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। তিনি চান, তরুণ প্রজন্ম সন্তান নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারুক এবং পরিবার গঠনের আনন্দদায়ক মুহূর্তগুলো উপভোগ করুক।
ফিলিপসন বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ মা কর্মজীবী হওয়ায় শিশুদের জন্য নিরাপদ ও সহজলভ্য যত্ন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধি ও অতিমূল্যবান শিশু যত্ন ব্যবস্থা। বাড়িভাড়া, খাবার, জ্বালানিসহ প্রতিটি খাতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি জানান, সরকার এখন ২০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন নার্সারি চালু করতে যাচ্ছে, যাতে অন্তত চার হাজার শিশুকে স্কুলে যাওয়ার আগেই যত্ন ও শিক্ষার আওতায় আনা যায়। পরবর্তীতে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০-তে উন্নীত করা হবে।
শুধু নার্সারি নয়, আরও কিছু পরিবারবান্ধব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—ফ্রি প্রাতঃরাশ ক্লাব, অতিরিক্ত চাইল্ডকেয়ার সময়সীমা, বিনামূল্যে স্কুল খাবার এবং স্কুল ইউনিফর্মের খরচে সীমা নির্ধারণ।
শিক্ষামন্ত্রী বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবগুলোকে নাকচ করে বলেন, তারা কেবল লোক দেখানো কিছু ধারণা দিয়েছে, যেগুলোর বাস্তবভিত্তি নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, লেবার পার্টি পরিবার গঠনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী, কার্যকর এবং সমর্থনযোগ্য নীতি গ্রহণ করছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সমাজে যখন মানুষ সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিরাপদ ও আশাবাদী বোধ করবে, তখনই জন্মহার বাড়বে এবং পরিবার গঠনের প্রতি মানুষের আগ্রহ ফিরে আসবে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
৩০ জুন ২০২৫