ভারতীয় মালিকানাধীন টাটা স্টিল যুক্তরাজ্যের পোর্ট ট্যালবোটে দুটি ব্লাস্ট ফার্নেস কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে সেখানকার প্রায় তিন হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সেপ্টেম্বর নাগাদ দুটি কারখানাই বন্ধ হয়ে যাবে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো এটিকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেছে।
যুক্তরাজ্য সরকার জানায়, তারা তাদের কর্মচারী ও স্থানীয় অর্থনীতিকে সমর্থন করবে। টাটা স্টিলে বর্তমানে আট হাজার কর্মী কাজ করছে। যার মধ্যে প্রায় চার হাজার যুক্তরাজ্যের পোর্ট টালবোটে অবস্থিত সবচেয়ে বড় ইস্পাত কারখানায় রয়েছে। সেখানে দুটি কয়লাচালিত ব্লাস্ট ফার্নেসের চুল্লি রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলে কর্মী ছাঁটাই শুরু হবে এবং সেপ্টেম্বরে আরো বেশিসংখ্যক ছাঁটাই করা হবে।
সম্প্রতি কোম্পানিটির নির্বাহী, স্থানীয় কমিউনিটির প্রতিনিধি, জিএমবি ইউনিয়ন ও ইউনাইট ইউনিয়নের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। টাটা স্টিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল এটি বন্ধের আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বৈঠকে ইউনিয়নের সদস্যরা একটি ব্লাস্ট ফার্নেস চালু রাখার অনুরোধ করে। তবে প্রতিষ্ঠানটি তা প্রত্যাখ্যান করে।
সংস্থাটি নতুন একটি কারখানা তৈরি করতে যাচ্ছে। নতুন কারখানায় এমন পদ্ধতিতে ইস্পাত তৈরি করা হবে, যার মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমে আসবে। এ কারখানা তৈরির ক্ষেত্রে মোট ১২৫ কোটি পাউন্ড খরচ হবে। ৫০ কোটি পাউন্ড সরকারি ভর্তুকি দেয়া হবে। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে প্রায় ১০ লাখ পাউন্ড মূল্যের আর্থিক ক্ষতি রোধ হবে। কারখানাটি পরিবেশের দিক থেকে নিরাপদ ও এটি পরিচালনার জন্য কম সংখ্যক কর্মী প্রয়োজন।
বন্ধ কারখানার ৩৮ বছর বয়সী প্রকৌশলী শন স্পেন্সার বলেন, ‘ইলেকট্রিশিয়ান, ফিটারদের মতো প্রযুক্তি খাতের কর্মীদের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় আসছে। অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার চাকরি চলে যাচ্ছে।’
ক্যাসি জোনস নামের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক, টাটা ও স্টিল কারখানাগুলোয় আমাদের অনেক পরচিতি লোক কাজ করে। অনেকের জীবিকা ইস্পাতের ওপর নির্ভরশীল। এটি পরিবেশের জন্য সত্যিই খারাপ। কিন্তু আবার এটি অনেক কাজের ক্ষেত্র তৈরি করেছে।’
যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাজ্যের ইস্পাত খাতের জন্য একটি টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।’
প্রসঙ্গত, চাকরিচ্যুত কর্মীদের জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে ৮ কোটি পাউন্ড এবং টাটা থেকে ২ কোটি পাউন্ড সহায়তা নেয়া হয়েছে। তবে টাটা স্টিল ও যুক্তরাজ্য সরকারকে তাদের পদ্ধতির পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় লেবার পার্টির এমপি স্টিফেন কিনক।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৩ জানুয়ারি ২০২৪