4.7 C
London
December 26, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে ডমোস্টিক ভায়োলেন্সের মামলায় আইনি সহায়তা বাধ্যতামূলক করার দাবি বার কাউন্সিলের

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ১৮ হাজার ব্যারিস্টারের প্রতিনিধিত্বকারী বার কাউন্সিল জানিয়েছে, গার্হস্থ্য নির্যাতন সংক্রান্ত সব পারিবারিক আদালতের মামলা আইনি সহায়তার আওতায় আনতে হবে— উভয় পক্ষের জন্যই। একই সঙ্গে তারা নির্যাতনের শিকারদের ক্ষেত্রে আয়ভিত্তিক যোগ্যতা যাচাই বা ‘মিনস টেস্টিং’ সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবি তুলেছে।

বার কাউন্সিলের নতুন নীতিপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে মাত্র ১৫ শতাংশ পরিবার আইনি সহায়তার জন্য যোগ্য বলে গণ্য হয়। এর ফলে যুক্তরাজ্যের বহু এলাকা এখন “আইনি পরামর্শের মরুভূমি”তে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে দক্ষ পারিবারিক আইনজীবীর সংকট যোগ হয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।

বার কাউন্সিল বলেছে, আইনি সহায়তা না পেয়ে বহু মানুষ নিজেদের মামলায় নিজেরাই আদালতে প্রতিনিধিত্ব করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে আদালতের সময় ও সম্পদ অপচয় হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই নির্যাতিতদের জন্য এটি হয়ে উঠছে পুনরায় মানসিক আঘাতের অভিজ্ঞতা।

তাদের মতে, পারিবারিক আদালত নারী ও কন্যাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা (VAWG) মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সরকার যদি এই খাতে বিনিয়োগ ও সংস্কার ঘটায়, তাহলে আগামী এক দশকে নারীর প্রতি সহিংসতা অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে শেষ হওয়া অর্থবছরে ১৬ থেকে ৫৯ বছর বয়সী প্রায় ১২ লাখ নারী ও ৫ লাখ ৫০ হাজার পুরুষ গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
অক্টোবরে প্রকাশিত ডোমেস্টিক অ্যাবিউজ কমিশনারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পারিবারিক আদালতে আসা মামলার প্রায় ৯০ শতাংশের সঙ্গেই গার্হস্থ্য নির্যাতনের সম্পর্ক রয়েছে।

বার কাউন্সিল আরও প্রস্তাব দিয়েছে— পারিবারিক আইনে আইনি সহায়তার তহবিল বাড়ানো, পাথফাইন্ডার কোর্ট ও ফ্যামিলি ড্রাগ অ্যান্ড অ্যালকোহল কোর্ট (FDAC) কার্যক্রমে পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করা এবং আদালতে আগতদের জন্য উন্নত সহায়তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার।

বার কাউন্সিলের চেয়ার বারবারা মিলস কেসি (Barbara Mills KC) বলেছেন, “নারী ও কন্যাদের প্রতি সহিংসতা কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি এখন এক জননিরাপত্তা সংকট। আমরা জানি, অনেক নারী তাদের ঘরে এমন পুরুষের হাতেই নির্যাতিত হচ্ছেন, যারা তাদের ভালোবাসার দাবি করে।”

তিনি বলেন, “যদি আমরা পারিবারিক ন্যায়বিচারকে অপরাধবিচারের সঙ্গে সমান গুরুত্ব না দিই, তাহলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা কেবল সমস্যার ওপরে আঁচড় দিতে পারব।”

মিলস আরও জানান, অনেক আদালতে আজও ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তকে একই অপেক্ষাকক্ষে বসতে হয়, কোথাও আবার নেই পানীয় জল বা হাত ধোয়ার সুবিধা। নিরাপত্তাহীনতার কারণে আইনজীবী ও ভুক্তভোগীরাও হুমকির মুখে পড়েন।

তার ভাষায়, “দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অর্থসংকটে আদালত ব্যবস্থা এখন জীর্ণ ও জনবলহীন। জরুরি বিনিয়োগ ছাড়া এটি সচল রাখা সম্ভব নয়। আমাদের এখনই একটি সহজলভ্য, ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক ন্যায়বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা আগেভাগে হস্তক্ষেপ ও প্রতিরোধে কাজ করবে।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনীয় শরনার্থী প্রবেশে বাঁধা

যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট বিশৃঙ্খলায় হাজারো যাত্রী আটকা, দুর্বল যোগাযোগে ক্ষোভ প্রকাশ

বৃটেনে ‘পরিবেশবান্ধব’ রমজানে মসজিদ হবে প্লাস্টিকমুক্ত