ব্রিটেনে শপলিফটিং এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র পরিচর্যায় থাকা অসহায় শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করছে দোকান থেকে দামী পণ্য চুরির কাজে। শিশুদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে ডিজাইনার জুতা বা ট্র্যাকস্যুট দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে। এভাবে ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোররা নিয়মিত দোকানে প্রবেশ করে দামি হুইস্কি ও শ্যাম্পেন চুরি করছে।
স্কটল্যান্ডে এক বড় অপরাধচক্র বিনামূল্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিশোরদের দূরবর্তী শহরে পাঠাচ্ছে। ছোট ও নিরাপত্তাহীন দোকানগুলোকে “সহজ লক্ষ্য” হিসেবে বেছে নিয়ে তারা চুরির অভিযান চালাচ্ছে।
এই প্রবণতা ব্রিটেনে শপলিফটিং মহামারিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বর্তমানে খুচরা ব্যবসায়ীদের বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২.২ বিলিয়ন পাউন্ডে। ফলে ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন এবং ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত খরচের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
নিরাপত্তা খাতে ব্যবসায়ীরা গত বছর ১.৮ বিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছেন, তবুও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। একই সঙ্গে সরকারও অতিরিক্ত সম্পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের মতে, প্রকৃত সমাধান হবে যদি পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় প্রতিটি শপলিফটিং ঘটনায়।
অপরাধনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক যুগের অপরাধ গ্যাংয়ের মতো এসব চক্র কিশোরদের কেবল ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। সামান্য কিছু দিয়ে তাদের দিয়ে কোটি টাকার ক্ষতির মতো অপরাধ করানো হচ্ছে। কোনো বিপদ হলে এসব শিশুদের একপাশে সরিয়ে দেওয়া হয়।
খুচরা কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত এক বছরে প্রতি ১০ জন কর্মীর মধ্যে অন্তত একজনকে অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় শপলিফটিং এখন শুধু চুরি নয়, বরং সহিংস অপরাধে রূপ নিচ্ছে।
সরকারের ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের নেইবারহুড পুলিশিং পরিকল্পনা এবং দোকানকর্মীর ওপর হামলাকে পৃথক অপরাধ হিসেবে গণ্য করার পদক্ষেপ খুচরা ব্যবসায়ীদের আশার সঞ্চার করেছে। তবে অনেকের মতে, পুলিশের প্রতি আস্থা ফেরাতে হলে প্রতিটি অভিযোগে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫