ডানপন্থী ও অভিবাসনবিরোধী প্রতিবাদকারীদের হুমকির মুখে যুক্তরাজ্যের শরণার্থী সহায়তা সংস্থা ও আইনজীবীরা এখন নিরাপত্তা সংকটে পড়েছেন। অন্তত দুটি এনজিও বিশ্বাসযোগ্য হুমকির কারণে অফিস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
শরণার্থী ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ১৫০টিরও বেশি আইনজীবী, মানবাধিকার, শরণার্থী ও পরিবেশবিষয়ক সংগঠন যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ধর্ষণ ও মৃত্যুর হুমকিসহ ভয়াবহ আক্রমণের মুখে পড়ছেন। লেবার সরকারের বিতর্কিত “ওয়ান ইন, ওয়ান আউট” নীতির আওতায় যেসব আশ্রয়প্রার্থীকে ফ্রান্সে পাঠানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তাদের সহায়তায় নিয়োজিত সংগঠনগুলো বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
লিবার্টি, গ্রীনপিস, কেয়ার৪ক্যালেইস, বেইল ফর ইমিগ্রেশন ডিটেইনিজ, চুজ লাভ, রানিমিড ট্রাস্ট ও ফ্রিডম ফ্রম টর্চারসহ উল্লেখযোগ্য সংগঠন এবং একাধিক কিউসি আইনজীবী বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। তারা বলেন, এটি সংহতির প্রতীক এবং ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে যৌথ অবস্থান।
যৌথ বিবৃতিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিবাসী ও শরণার্থী সহায়তাকারী সংগঠনগুলোকে টার্গেট করে প্রচারণা বাড়ছে। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, উত্তেজনা উসকে দেওয়ার মতো ভাষা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
সংগঠনগুলোর কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করা হচ্ছে, যা মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। হুমকিমূলক বার্তায় একটিতে বলা হয়েছে, “এই লিবারেল বোকারা ধর্ষণ বা ছুরি মারা না খাওয়া পর্যন্ত বুঝবে না।” অন্য একটি বার্তায় একজন নারী কর্মীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব আক্রমণ শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাস্তব প্রভাব ফেলছে। অফিসে হামলার আশঙ্কায় অনেক সংগঠন নিরাপদ কক্ষ ব্যবহার করছে, কেউ কেউ অফিস স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়েছে। শরণার্থী সহায়তা খাত, যা আগে থেকেই সীমিত সম্পদে কাজ করছিল, এখন ভয়ে নীরব হতে বাধ্য হচ্ছে।
বেইল ফর ইমিগ্রেশন ডিটেইনিজ-এর একজন মুখপাত্র বলেন, “সাম্প্রতিক আক্রমণগুলোই প্রমাণ করে আমাদের কাজ কতটা জরুরি। মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য যারা লড়ছে, তাদের ভয় দেখানো যাবে না। বরং এতে আমাদের সংকল্প আরও শক্তিশালী হয়েছে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫