নতুন আবাসন প্রকল্পে পার্কিং স্পেস সীমিত করার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্যের লেবার সরকার। প্রস্তাবিত নীতিমালায় কাউন্সিলগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে পার্কিং স্পেসের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে, যেখানে আলাদা করে কোনো যুক্তি দেখানোর প্রয়োজন থাকবে না।
সরকারের দাবি, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো গাড়ি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা এবং গণপরিবহন, হাঁটা ও সাইকেল ব্যবহারের মতো পরিবেশবান্ধব বিকল্পকে উৎসাহ দেওয়া। জাতীয় পরিকল্পনা নীতিমালা কাঠামো (এনপিপিএফ) পুনর্লিখনের অংশ হিসেবে এই প্রস্তাব আনা হয়েছে, যা এক দশকের মধ্যে পরিকল্পনা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সংস্কার হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
সমালোচকদের মতে, এই নীতি কার্যকর হলে আবাসন এলাকায় অফ-রোড পার্কিংয়ের তীব্র সংকট তৈরি হবে। এতে চালকেরা বাধ্য হয়ে ফুটপাত বা সড়কের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে গাড়ি পার্ক করতে পারেন, যা জননিরাপত্তা ও যানজট উভয়ই বাড়াবে।
ছায়া পরিবহনমন্ত্রী রিচার্ড হোল্ডেন এমপি অভিযোগ করে বলেন, লেবার সরকার এমন সব নিয়ম বাতিল করেছে যা পরিবারগুলোকে পার্কিং দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করত। তার মতে, এই নীতির ফলে ফুটপাত অবরুদ্ধ হবে, সড়কে যানজট বাড়বে এবং জরিমানার মাধ্যমে চালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সুযোগ তৈরি হবে।
২০১১ সালে যুক্তরাজ্যে নতুন আবাসন প্রকল্পে পার্কিং স্পেসের ওপর কাউন্সিলের আরোপিত সীমা তুলে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় সরকার বলেছিল, এসব নিয়ম চালকদের অন্যায্যভাবে শাস্তি দিচ্ছিল এবং সড়কে বিশৃঙ্খল পার্কিং বাড়াচ্ছিল। ২০১৫ সালের পর থেকে কাউন্সিলগুলো কেবল তখনই পার্কিং সীমা আরোপ করতে পারত, যখন তারা ‘স্পষ্ট ও জোরালো’ যুক্তি দেখাতে পারত।
লেবার সরকারের নতুন পরিকল্পনায় সেই অবস্থান উল্টে যাচ্ছে। এখন কাউন্সিলগুলোকে পার্কিং সীমা নির্ধারণ করতে হবে, তবে নীতিমালায় বলা হয়েছে—প্রয়োজনে নমনীয়তা রাখা এবং নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক চাহিদা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
অ্যালায়েন্স অব ব্রিটিশ ড্রাইভার্সের ব্রায়ান গ্রেগরি বলেন, এটি সড়ক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের ক্রমবর্ধমান চাপের অংশ। তার মতে, পার্কিং সংকট তৈরি করে কাউন্সিলগুলো পার্কিং চার্জ ও আইন প্রয়োগের মাধ্যমে চালকদের কাছ থেকে আরও অর্থ আদায় করতে পারবে।
অটোমোবাইল সংগঠন এএ-এর সড়ক নীতিবিষয়ক প্রধান জ্যাক কুজেন্স সতর্ক করে বলেন, পার্কিং স্পেস কমালে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পার্কিং বাড়তে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, উন্নয়ন প্রকল্পের রাস্তা স্থানীয় কাউন্সিলের অধীনে যেতে কয়েক বছর লেগে যায়, ফলে পার্কিং সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হয় না।
সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য এই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গৃহায়ন, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, নতুন নির্দেশনা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জন্য বিষয়টি আরও পরিষ্কার করবে এবং পার্কিং সীমা নির্ধারণের আগে জনগণের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ
এম.কে

