8.3 C
London
February 24, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে নতুন সরকারি আইনে যানবাহন চুরির সরঞ্জাম নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে যানবাহন চুরির ৪০% ক্ষেত্রে অপরাধীরা যে উন্নত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে, তা নতুন আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করা হবে। সরকারের লক্ষ্য হলো দেশের রাস্তা আরও নিরাপদ করা।

যানবাহন চুরি হওয়া ভুক্তভোগীদের জন্য ব্যয়বহুল ও মানসিকভাবে কষ্টকর। এটি জীবিকা ব্যাহত করে, মানুষকে কাজ করা এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো থেকে বিরত রাখে।
সরকার অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করছে যাতে কর্মজীবী মানুষের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। নতুন আইনের মাধ্যমে পুলিশ ও আদালতকে আরও ক্ষমতা দেওয়া হবে, যাতে তারা ‘সিগন্যাল জ্যামার’-সহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারী অপরাধী ও এগুলোর উৎপাদন ও সরবরাহকারী সংঘবদ্ধ চক্রকে টার্গেট করতে পারে।
আগে, এসব ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা প্রমাণ করা ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করা সম্ভব ছিল না।
তবে নতুন আইনের অধীনে, কেউ যদি এসব ডিভাইস নিজের কাছে রাখে, আমদানি করে, তৈরি বা পরিবর্তন করে, কিংবা বিতরণ করে, তাহলে তার সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং অপরিমিত পরিমাণ অর্থ জরিমানা হতে পারে। এখন থেকে মালিককে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি বৈধ উদ্দেশ্যে ডিভাইসটি ব্যবহার করছিলেন, অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই নতুন ব্যবস্থা “পরিবর্তনের পরিকল্পনা”-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এটি সরকারের প্রধান “অপরাধ ও পুলিশিং বিল”-এর অন্তর্ভুক্ত, যা মঙ্গলবার পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে বলে জানা যায়।
পুলিশের অপরাধ প্রতিরোধ মন্ত্রী ডেম ডায়ানা জনসন বলেন:
“এই ধরনের চুরি ভুক্তভোগীদের জন্য ধ্বংসাত্মক, কারণ তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে যানবাহনের ওপর নির্ভরশীল। আমরা জানি, জনগণের মধ্যে এই ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর ব্যাপক ব্যবহারের কারণে উদ্বেগ রয়েছে।”
“তাই আমরা নতুন আইন আনছি, যা মূল সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে। এগুলো চোর এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের হাতে যাওয়া বন্ধ করবে।”
সরকার ন্যাশনাল পুলিশ চিফস’ কাউন্সিল (NPCC)-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে, যাতে পুলিশের ন্যাশনাল ভেহিকল ক্রাইম রিডাকশন পার্টনারশিপ (NVCRP)-এর মাধ্যমে যানবাহন সংক্রান্ত অপরাধ মোকাবিলা করা যায়। এতে পুলিশ ও গাড়ি নির্মাতারা একসঙ্গে কাজ করবে।
গাড়ি চুরির সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি হলো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা। ‘কি-লেস রিপিটার’ এবং ‘সিগন্যাল অ্যামপ্লিফায়ার’-এর মাধ্যমে রিমোট লকিং ডিভাইসের সংকেত বিকৃত করা হয়।
২০২২-২৩ সালের ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের অপরাধ সমীক্ষা অনুসারে, যানবাহন চুরির ৪০% ক্ষেত্রে অপরাধীরা রিমোট লকিং ডিভাইসের সংকেত বিকৃত করেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যানবাহন সংক্রান্ত চুরির ৭,৩২,০০০টি ঘটনা ঘটেছে।
লন্ডনে, প্রায় ৬০% যানবাহন চুরিতে ‘সিগন্যাল জ্যামার’ ব্যবহৃত হয়, যা মেট্রোপলিটন পুলিশ সার্ভিস অনুমান করেছে।
সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের মাধ্যমে বড় পরিসরে যানবাহন চুরি করা হয়, কারণ চোরাই গাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং এটি অপরাধীদের জন্য লাভজনক ব্যবসা। এমনকি সর্বশেষ মডেলের গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
আরএসি (RAC)-এর নীতিনির্ধারক সাইমন উইলিয়ামস বলেন:
“সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ৩৭০টি গাড়ি চুরি হয়। তাই ‘সিগন্যাল জ্যামার’ নিষিদ্ধ করা অত্যন্ত জরুরি এবং আমরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।”
এএ (AA)-এর প্রেসিডেন্ট এডমন্ড কিং বলেন:
“এই কঠোর শাস্তির ফলে চোররা নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবে। যানবাহনের প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে, চোররাও ততই নতুন কৌশল আবিষ্কার করেছে। রিলে চুরি ও সিগন্যাল জ্যামিং খুবই সাধারণ হয়ে গেছে, তাই এই নতুন ব্যবস্থা পুলিশকে গাড়ি চুরি দমনে সাহায্য করবে।”
ন্যাশনাল পুলিশ চিফস’ কাউন্সিলের (NPCC) অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ কনস্টেবল জেনি সিমস বলেন:
“এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ‘সিগন্যাল জ্যামার’ শুধুমাত্র অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। এগুলোর সহজলভ্যতা কমানো হলে পুলিশ ও গাড়ি শিল্প একসঙ্গে গাড়ি চুরি প্রতিরোধে আরও সফল হতে পারবে।”
সূত্রঃ ইউকে ডট গভ
এম.কে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

ইউকে জুড়ে ব্ল্যাকআউট: জেনে নিন আপনার বাড়িতে কখন বিদ্যুৎ থাকবে না

অনলাইন ডেস্ক

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ গণভোটের প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক

কঠিন নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ “যুক্তরাজ্যে মাইগ্রেশন”