যুক্তরাজ্যে নেট মাইগ্রেশন বছরে প্রায় অর্ধেকে কমে ৪৩১,০০০-এ নেমে এসেছে, যা কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার সরকারের জন্য এক বড় স্বস্তির বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ONS) প্রকাশিত নতুন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়া বছরে আগতদের সংখ্যা ছিল ৯৪৮,০০০ এবং দেশ ছেড়েছেন ৫১৭,০০০ জন। ফলে নেট মাইগ্রেশন দাঁড়িয়েছে ৪৩১,০০০-এ, যা আগের বছরের ৮৬০,০০০ থেকে প্রায় অর্ধেক।
এই পতন ২০২০ সালের কোভিড পরবর্তী সময়ের পর সবচেয়ে বড় বাৎসরিক হ্রাস। শুধু তা-ই নয়, এটি ব্রিটিশ ইতিহাসে এক বছরে সবচেয়ে বড় সংখ্যাগত হ্রাস।
ONS জানিয়েছে, মূলত নন-ইইউ দেশ থেকে কাজ ও পড়াশোনার জন্য আগতদের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই পরিবর্তন ঘটেছে।
২০২৩ সালের জুনে রেকর্ড ৯০৬,০০০ জন নেট মাইগ্রেশনের শীর্ষ ছুঁয়ে, ২০২৪ সালের জুনে তা কমে দাঁড়ায় ৭২৮,০০০-এ। লেবার সরকার ক্ষমতা নেওয়ার ঠিক আগেই এই পতনের সূচনা হয়েছিল, যা এখন আরও স্পষ্ট।
পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ সরকারের বিভিন্ন কঠোর নীতির ধারাবাহিকতা এবং বর্তমান লেবার সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে এই পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখযোগ্য নীতিমালার মধ্যে ছিল—
*বিদেশি শিক্ষার্থী ও কেয়ার ওয়ার্কারদের জন্য নির্ভরশীল আনার নিষেধাজ্ঞা,
*কর্মসংস্থানের ভিসার জন্য ন্যূনতম বেতন দ্বিগুণ করে £৩৮,৭০০ করা,
*পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনতে বার্ষিক ন্যূনতম আয় £২৯,০০০ নির্ধারণ।
এদিকে, রিফর্ম ইউকের উত্থান এবং স্থানীয় নির্বাচনে তাদের সাফল্যের পর অভিবাসন ইস্যুতে লেবার সরকারের অবস্থান আরও কঠোর হয়েছে।
কিয়ার স্টারমার সম্প্রতি বলেছেন, “কঠোর নিয়ন্ত্রণ না আনলে যুক্তরাজ্য এক ‘অপরিচিতদের দ্বীপে’ পরিণত হতে পারে।” তার এই বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলেও, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটি বাস্তবতার প্রতিফলন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেন, “নির্বাচনের পর থেকে ৩,০০,০০০ কম নেট মাইগ্রেশন একটি বড় অগ্রগতি। আমরা ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো, অবৈধ কর্মসংস্থান রোধ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত শক্তিশালী ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
নতুন অভিবাসন হোয়াইট পেপার এবং কঠোর নীতিমালা আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন চিত্রে আরও বড় পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২২ মে ২০২৫