যুক্তরাজ্যে হোম অফিসের অভ্যন্তরে গভীর অসন্তোষ দেখা দিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। হোম সেক্রেটারি ইয়ভেট কুপার সোমবার ঘোষণা দেন, এই গ্রুপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে, যার ফলে সংগঠনের সদস্য হওয়া কিংবা সমর্থন জানানো সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর কারাদণ্ড।
প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিবাদী সরাসরি কর্মসূচিভিত্তিক সংগঠনকে আইসিস, আল-কায়েদা বা ন্যাশনাল অ্যাকশনের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাতারে ফেলা হলো। সিদ্ধান্তটি নিন্দার ঝড় তুলেছে বিভিন্ন প্রতিবাদী সংগঠন, সিভিল সোসাইটি এবং নানা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে।
হোম অফিসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, অফিসজুড়ে উদ্বেগের আবহ বিরাজ করছে। তার ভাষায়, “শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী গ্রুপকে প্রকৃত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এক কাতারে ফেলা হাস্যকর। সহকর্মীদের মুখে শুধু প্রশ্ন—এটা কীভাবে কার্যকর হবে? প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সমর্থকদের সবাইকে কি এখন সন্ত্রাসী বলা হবে?”
তিনি আরও বলেন, “এটি এক স্পষ্ট রাজনৈতিক কৌশল, যা অস্ত্র কোম্পানিগুলোর মুনাফা রক্ষার জন্য প্রতিবাদকে দমন করতে চাইছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনকে রাজনৈতিকভাবে অপব্যবহার করা হচ্ছে।”
এর আগে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন দাবি করে, তারা আরএএফ ব্রাইজ নর্টনে ঢুকে দুটি সামরিক বিমানে রঙ ছেটায়। সংগঠনটি জানায়, ব্রিটেন এখনো ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ করছে এবং গাজায় নজরদারি ও জ্বালানি সহায়তা দিচ্ছে। এই ঘটনার পর চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের দাবি, এই গ্রেপ্তার দেখায় যে নিষিদ্ধকরণ মূলত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কণ্ঠগুলো বন্ধ করার কৌশল।
বিদ্রোহ শুধু হোম অফিসেই নয়, সম্প্রতি ৩০০-রও বেশি ফরেন অফিস কর্মী সরকারের গাজা-নীতি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেন। জবাবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, সরকারের নীতির সঙ্গে যদি কারও গভীর মতানৈক্য থাকে, তাহলে পদত্যাগই সম্মানজনক উপায়।
নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত প্রস্তাব সোমবার পার্লামেন্টে উঠবে এবং এটি অনুমোদিত হলে শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে। হোম অফিস এ বিষয়ে মন্তব্য না করে কেবল ইয়ভেট কুপারের আগের বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করেছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২৮ জুন ২০২৫