যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেট জায়েন্ট টেসকো খাদ্য অপচয় বন্ধ ও নেট জিরো লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টায় বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
সুপারমার্কেটটি একটি “ইয়েলো স্টিকার” পদ্ধতির পরীক্ষা চালাচ্ছে, যেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলা খাবারের দাম £0 নির্ধারণ করা হয়েছে। সাধারণত, টেসকোর ছাড় সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে, তবে এবার বিনামূল্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পরিবর্তন পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি এক্সপ্রেস স্টোরে চালু করা হয়েছে, যা রাত ৯.৩০টার পর ক্রেতাদের জন্য কার্যকর হবে।
টেসকো সাধারণত বিক্রি না হওয়া খাদ্য দাতব্য সংস্থাগুলোকে দান করে, তবে কিছু খাবার জৈব বিশ্লেষণ (anaerobic digestion) পদ্ধতিতে গ্যাস উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা অপচয়ের মধ্যে গণ্য হয়।
নতুন এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগের অধীনে, টেসকো এখনও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে খাদ্য দান করবে, তবে দিনের শুরুতে হ্রাসকৃত মূল্যের ইয়েলো স্টিকার আইটেম কেনার ক্ষেত্রে স্টাফদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বিক্রয়কাল শেষ হওয়ার আগে যে খাবারগুলো অবিক্রীত থাকবে এবং “রিডিউস টু ক্লিয়ার” (ছাড়ে বিক্রয়ের জন্য) হিসেবে চিহ্নিত থাকবে, তা ক্রেতারা বিনামূল্যে নিতে পারবেন।
টেসকো কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া একটি অভ্যন্তরীণ নোটে জানায়, এই উদ্যোগ “খাদ্য অপচয় কমানোর লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে”।
নেট জিরো অর্জনের লক্ষ্যে টেসকোর উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা রয়েছে, যা ২০২৩ সালে “সায়েন্স বেইসড টার্গেটস ইনিসিয়েটিভ” দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে নিজেদের কার্যক্রমে খাদ্য অপচয় অর্ধেক কমানোর লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, খাদ্য অপচয় কমানোর অগ্রগতির বিষয়ে টেসকো তাদের পূর্বের হিসাব সংশোধন করে। তারা বুঝতে পারে যে, জৈব বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য বর্জ্য ব্যবহারের কারণে প্রকৃতপক্ষে ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মাত্র ১৮% খাদ্য অপচয় কমেছে, যা আগে তারা ৪৫% বলে মনে করেছিল।
টেসকোর একজন মুখপাত্র নতুন এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন:
“আমরা সর্বদা খাদ্য অপচয় কমানোর নতুন ও উদ্ভাবনী উপায় খুঁজছি। আমাদের সমস্ত স্টোরে অতিরিক্ত অবিক্রীত খাবার দাতব্য সংস্থা ও কমিউনিটি গ্রুপকে দান করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ খাবারের যোগান দেওয়া হয়।
এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগের মাধ্যমে, আমাদের কয়েকটি এক্সপ্রেস স্টোরের গ্রাহকরা দিন শেষে যেসব ‘ইয়েলো স্টিকার’ আইটেম অবিক্রীত থাকবে, সেগুলো বিনামূল্যে নিতে পারবেন। তবে এটি আগে দাতব্য সংস্থা ও কর্মীদের প্রস্তাব দেওয়া হবে।”
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে
১৩ মার্চ ২০২৫