যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাই কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম ও জবাবদিহিতার অভাবের অভিযোগ তুলেছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির একজন সিনিয়র সদস্য নবাব উদ্দিন। সম্প্রতি তিনি হাই কমিশনারের উদ্দেশ্যে একটি খোলাচিঠি প্রকাশ করেছেন, যেখানে লন্ডনের ঐতিহাসিক বাংলাদেশ হাউস এবং একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বরাদ্দকৃত £৪৫০,০০০ তহবিলের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উত্তর লন্ডনের হাইবেরি হিলে অবস্থিত বাংলাদেশ হাউস ভবনটি ১৯৬৪ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের দ্বারা কেনা হয় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এটি একটি ঐতিহাসিক আন্দোলনকেন্দ্রে রূপ নেয়। ১৯৭২ সালে ভবনটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয় এবং হাই কমিশনের দায়িত্বে ছেড়ে দেওয়া হয় এই মর্মে যে, এটি কমিউনিটির ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
তবে ভবনটি দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকায়, ১৯৯৯ সালে হাই কমিশন তা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় এবং ২০০১ সালে মাইল এন্ডের কোবার্ন রোডে নতুন ভবন কেনা হয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গঠনের লক্ষ্যে। কিন্তু ২০০৪ সালে, কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা বা কমিউনিটির সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই, সেই ভবনটি মাত্র £৪৫০,০০০ পাউন্ডে বিক্রি করা হয়।
নবাব উদ্দিনের খোলাচিঠিতে বলা হয়েছে, সে সময় হাই কমিশন জানিয়েছিল যে, বিক্রির অর্থ সোনালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তবে বিগত দুই দশকে একাধিক হাই কমিশনার পরিবর্তিত হলেও, সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি।
চিঠিতে তিনি বর্তমান হাই কমিশনারের কাছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব চানঃ
১. কোবার্ন রোড বিক্রির অর্থ এখনো নিরাপদে আছে কিনা এবং তা কোথায় সংরক্ষিত?
২. তহবিলের বর্তমান পরিমাণ ও এর সুদ বা বিনিয়োগজনিত মুনাফা কত?
৩. নতুন করে ভবন ক্রয় বা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গঠনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
এই বিষয়ে নবাব উদ্দিন বলেন, “এটি শুধু অর্থের প্রশ্ন নয়—এটি ঐতিহ্য, কমিউনিটির অধিকার এবং জবাবদিহিতার প্রশ্ন।”
হাই কমিশন এখনো এই খোলাচিঠির আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি, তবে কমিউনিটি নেতাদের মতে, দীর্ঘ প্রতিশ্রুতি ও অপেক্ষার পর এবার প্রকৃত পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে।
কমিউনিটির পক্ষ থেকে এখন দাবি উঠছে—সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গঠনের প্রতিশ্রুতি পূরণ হোক এবং তহবিলের ব্যবহারের পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হোক।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১৯ জুন ২০২৫