যুক্তরাজ্যের অবৈধ অর্থ সংক্রান্ত কার্যকলাপ ব্যাহত করতে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা দিতে আজ ১ মার্চ সুরক্ষা মন্ত্রী টম তুগেন্দাট কর্তৃক ঘোষিত হয়েছে জোরদার অ্যাকশন প্ল্যান। এই পরিকল্পনায় কিশোর-কিশোরীদের আর্থিক শোষণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবে সরকার। তাছাড়া গোয়েন্দাদের বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে জালিয়াতদের সনাক্ত করতে যৌথভাবে কাজ করারও পদক্ষেপ নিবে কনজারভেটিভ সরকার।
আর্থিক কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ব্যক্তি একজন মাদক ব্যবসায়ী, মানব পাচারকারী এবং জালিয়াতি সহ জঘন্য অপরাধীদের পক্ষে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন এবং অর্থ লুকিয়ে রাখেন বলে তথ্যমতে জানা যায়।
সিআইএফএএস অনুমান করে যে যুক্তরাজ্যে ৩৭০০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল যা ২০২৩ সালে বিভিন্ন আর্থিক জালিয়াতির সাথে সম্পর্কিত ছিল। জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) এর অনুমান অনুসারে, প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন পাউন্ড অবৈধ অর্থ যুক্তরাজ্যে মানিলন্ডার করা হয়।
তথ্যানুযায়ী জানা যায়, ২৩% অর্থ জালিয়াতিতে ২১ বছরের কম বয়সী এবং ৬৫% ঘটনায় ৩০ বছরের কম বয়সীরা জড়িত থাকে। যাদেরকে সহজ অর্থোপার্জনের লোভ দেখিয়ে এইসব কাজে জড়িত করা হয়। একবার তারা এই চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ার পর জালিয়ার চক্র তাদের ব্ল্যাকমেল করা শুরু করে। যার ফলে এই চক্রের ফাঁদে পড়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে তারা এবং আরো বিভিন্ন অপরাধ সংগঠনে বাধ্য হয়।
আর্থিক কেলেঙ্কারি বন্ধ করতে সরকার কম বয়সীদের সচেতন করে গড়তে চায়। যার জন্য ব্যাংক কর্মচারী, শিক্ষক এবং পুলিশ সহ সমাজের বিভিন্ন পেশার লোকেদের আরো প্রশিক্ষিত করতে কাজ করার পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে পারলে হাজার হাজার শিশু,কিশোর অপরাধী গ্যাংদের দ্বারা অপরাধে জড়িয়ে পড়া হতে রক্ষা পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
নিরাপত্তা মন্ত্রী টম তুগেন্দাট বলেন, ” আমাদের বাচ্চাদের শোষণ করে এমন জঘন্য অপরাধীদের প্রতিরোধ করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা সংকল্পবদ্ধ এবং দুষ্টচক্রটি বন্ধ করতে চাই।”
চিলড্রেনস সোসাইটির কেটি ডার্লিংটন বলেছেন,
” আমরা শিশু,কিশোরদের আর্থিক কেলেঙ্কারি হতে রক্ষা করতে এবং এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছি। যে কিশোর গ্রুপ এই ধরনের জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়ে তারা এক ধরনের মানসিক ট্রমার ভিতরে পৌঁছে যায়। তাদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। ”
উল্লেখ্য যে, এনইসিসির তথ্যমতে অর্থ কেলেঙ্কারিতে মূলত ৩০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিরা সহজে জড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাজ্যের সিক্সথ ফোরম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ছাত্র-ছাত্রীরা সহজে অর্থ উপার্জনের জন্য এই টোপে পড়ে। যারা এই অপরাধ চক্রে জড়িয়ে যায় তারা নিজেকে এবং আশেপাশের লোকদের বিপজ্জনক অপরাধীদের সাথে জড়িয়ে ফেলে। যা ভবিষ্যতে তাদের গুরুতর ও সংগঠিত অপরাধে জড়িত ফেলার ঝুঁকিতে নিমজ্জিত করে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রঃ ইউকে ডট গভ
এম.কে
০১ মার্চ ২০২৪