যুক্তরাজ্যে রিফর্ম পার্টি পরিচালিত কেন্ট কাউন্সিলের নেত্রী লিন্ডেন কেমকারান স্বাস্থ্য ও কেয়ারখাতের বিদেশি কর্মীদের ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ইভেট কুপার ও কেয়ার মন্ত্রী স্টিফেন কিনককে চিঠি পাঠিয়েছেন।
কেমকারান এবং কাউন্সিলের সামাজিক সেবা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ডায়েন মোর্টন জানিয়েছেন, বিদেশি কেয়ার স্টাফদের হঠাৎ করে বিদায়ের কারণে স্থানীয় কেয়ার হোমগুলোতে চরম সংকট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে কেন্ট কাউন্টির প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কেয়ার কর্মী বিদেশি এবং তারা অনুমোদিত নিয়োগদাতার স্পনসরশিপে কাজ করছেন।
এই স্পনসরশিপের মাধ্যমে কাজের সুযোগ ২২ জুলাইয়ের পর বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ সরকার মে মাসে একটি নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছে, যেখানে কেয়ার ও স্বাস্থ্য খাতের ভিসা আরও কঠোর করা হয়েছে। এতে করে বহু কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন এবং অনেক নিয়োগদাতা স্পনসরশিপ লাইসেন্স হারাবেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কর্মীরা যদি যুক্তরাজ্যে থাকতে চান, তবে তাদের বাৎসরিক আয় হতে হবে অন্তত ৪১,০০০ পাউন্ড। এটি নতুন স্কিলড ওয়ার্কার ভিসার ন্যূনতম আয়সীমা। পাশাপাশি নিয়োগকারীদের জন্য জাতীয় বীমা (ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স কন্ট্রিবিউশন) বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
কেমকারান এবং মোর্টনের মতে, এই সিদ্ধান্ত কেয়ারখাতকে একপ্রকার ধ্বংসের মুখে ফেলবে। অনেক দক্ষ ও প্রয়োজনীয় কর্মী যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে অস্থিতিশীল এবং জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন রিফর্ম পার্টির জাতীয় অবস্থান অবশ্য অভিবাসন উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পক্ষে। মে মাসে ফারাজ বলেন, কেয়ার কর্মীরা দক্ষ নন এবং তাদের সীমিত সময়ের জন্যই আসার অনুমতি দেওয়া উচিত। তিনি শূন্য নেট অভিবাসনের (যতজন আসবে, ততজন যেতে হবে) দাবি তোলেন।
পার্টির উপনেতা রিচার্ড টাইস বলেন, “বিদেশি সস্তা ও অদক্ষ শ্রমিকদের ধারাবাহিক আগমন দেশের মজুরি হারকে দমন করছে” এবং ব্রিটিশদের নিজ দেশেই কেয়ার কাজ করা উচিত।
তাদের এই বক্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে—রিফর্ম পার্টির জাতীয় নীতির সঙ্গে স্থানীয় সরকারের বাস্তবতা কতটা সাংঘর্ষিক? পরিস্থিতি যে গুরুতর, তা পরিষ্কার, এবং সরকারের কাছ থেকে নীতিগত নমনীয়তা চেয়েছে একটি রিফর্ম-নেতৃত্বাধীন কাউন্সিলই।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৪ জুলাই ২০২৫