যুক্তরাজ্যের নাগরিক জীবনে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি ঘোষণা করেছেন নতুন জাতীয় ডিজিটাল আইডি চালুর পরিকল্পনা—যা দেশের লক্ষাধিক মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করে তুলবে। সরকারের দাবি, এই আইডি ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যকে আধুনিক যুগে প্রবেশ করাবে এবং নাগরিকদের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবে।
ডিজিটাল আইডির মাধ্যমে মানুষ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, চাকরির আবেদন, বাড়ি ভাড়া কিংবা শিশুর যত্ন সেবা—সবকিছু এক ক্লিকেই করতে পারবে। এটি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং নাগরিক জীবনের জটিলতা দূর করার একটি জাতীয় কৌশল।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নানা সেবার জন্য নাগরিকদের আলাদা আলাদা কাগজপত্র বহন করতে হয়—যেমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বিদ্যুৎ বিল, চাকরির আবেদন বা ভাড়াবাড়িতে থাকতে পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, “এই প্রক্রিয়া আর আধুনিক ব্রিটেনের সঙ্গে যায় না।”
নতুন ডিজিটাল আইডি চালু হলে এসব কাগজপত্রের প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে। প্রতিটি নাগরিক ও বৈধ বাসিন্দা বিনামূল্যে একটি ডিজিটাল আইডি পাবেন, যা তাদের পরিচয় যাচাইয়ের মূল মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।
বার্কলেজ ব্যাংকের এক শাখা পরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন,
“ডিজিটালাইজেশন ইতিমধ্যেই আমাদের জীবনের অনেক অংশ বদলে দিয়েছে—আমরা কীভাবে কেনাকাটা করি, ভ্রমণ করি বা ব্যাংকিং করি। এখন সময় এসেছে মানুষের জীবনকে আরও সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করার। ডিজিটাল আইডি মানে হচ্ছে মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে মুক্তি।”
তিনি আরও বলেন, এই আইডি হবে জীবনের এক ধরনের ‘বোর্ডিং পাস’, যা মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে, চাকরি পেতে বা সরকারি সেবায় প্রবেশে সহায়তা করবে।
ডিজিটাল আইডি চালু হলে যাদের পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, তারাও সহজে চাকরি বা ব্যাংকিং সুবিধা পাবেন। এটি সামাজিক সমতা নিশ্চিত করবে। একইসঙ্গে ডিজিটাল আইডি তথ্য সুরক্ষিতভাবে ফোনে সংরক্ষণ করবে, যাতে হারানো বা চুরি হওয়া কাগজপত্রের ঝুঁকি আর না থাকে।
এছাড়া বাড়ি ভাড়া বা মর্টগেজের আবেদন প্রক্রিয়াও দ্রুত হবে—প্রমাণপত্র যাচাই করা যাবে তাৎক্ষণিকভাবে।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ একটি জনমত পরামর্শ প্রক্রিয়া (Public Consultation) শুরু হবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে নতুন ডিজিটাল আইডি ব্যবস্থা নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।
এটি সরকারের বৃহত্তর ডিজিটাল আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ, যার মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল ভেটেরান কার্ড এবং ডিজিটাল ইনক্লুশন অ্যাকশন প্ল্যান—যার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে আধুনিক অর্থনীতির সুবিধা যেন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
সূত্রঃ ইউকে ডট গভ
এম.কে

