7.6 C
London
January 25, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে মা শপিংয়ে, ঘরে আগুনে আটকা পড়ে চার ছেলের মৃত্যু

যুক্তরাজ্যে চার নাবালক ছেলের মা, ডেভেকা রোজ, রোজকার শপিংয় করার সময় তার ঘরে আগুনে আটকে চার সন্তানের মৃত্যু হয়। যার জন্য দায়ী মা’কে, কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ডেভেকা রোজ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাউথ লন্ডনের সাটনে ভাড়া করা বাড়িতে তার দুই জোড়া যমজ সন্তানকে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে সেইন্সবারি সুপারমার্কেটে গিয়েছিলেন।

ঘটনার দিন তিন বছর বয়সী লেটন ও লোগান এবং চার বছর বয়সী কাইসন ও ব্রাইসন হোথ বাড়িতে একা ছিল। আগুন লাগার পর তারা ঘরে আটকা পড়ে।

৩০ বছর বয়সী রোজ, যিনি তার সঙ্গী থেকে আলাদা হয়ে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন, তাকে ওল্ড বেইলি আদালত অনিচ্ছাকৃত চারটি হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে।

শুক্রবার ওল্ড বেইলিতে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক মার্ক লুসক্রাফট। তিনি বলেন, “এটি একটি গভীর মর্মান্তিক ঘটনা, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”

বিচারক তাকে বলেন, “তুমি ঘরে ছোট শিশুদের রেখে গিয়েছিলে, আর শিশুরা এত ছোট ছিল যে তারা জানত না কী করতে হবে। তোমার কাজের অবহেলার কারণে তারা সবাই মারা গিয়েছে।”

বিচারে বলা হয়, রোজ এবং তার সন্তানরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করছিল। পুরো বাড়ি আবর্জনায় ভরা ছিল। টয়লেট এবং বাথটাব ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। বাথটাবের বদলে পাত্র এবং বালতি ব্যবহার করা হতো বাথরুমে।

লিভিং রুমে একটি সিগারেট বা মোমবাতি থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। শিশুরা উপরে উঠে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিল। এক প্রতিবেশী দরজা ভাঙার চেষ্টাও করেছিলেন। দমকলকর্মীরা পরবর্তীতে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে শিশুদের বিছানার নিচে মৃত অবস্থায় খুঁজে পায়।

চারজন শিশুকে পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে সেখানেও তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তারা ধোঁয়ার কারণে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায়।

রোজ দাবি করেছিলেন, তিনি শিশুদের তার এক বন্ধুর কাছে রেখে গিয়েছিলেন, যার নাম জেড। এই দাবির ভিত্তিতে দমকলকর্মীরা আবার বাড়ি তল্লাশি চালান। তবে পুলিশ পরে নিশ্চিত করে যে জেড নামের কেউ সেখানে ছিল না।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে রোজ স্বীকার করেন যে, আগেও দুইবার তিনি শিশুদের বাড়িতে একা রেখে গিয়েছিলেন।

শিশুদের বাবা ডাল্টন হোথ বলেন, “তাদের হারানো আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন। আমি কখনো এ শোক কাটিয়ে উঠতে পারব না। আমি শুধু তাদের সঙ্গে আবার মিলিত হওয়ার অপেক্ষায় আছি।”

বাচ্চাদের দাদি স্যালি জনসন আদালতে কেঁদে বলেন, “তাদের কান্না আর চিৎকার আমাকে চিরদিন তাড়িত করবে। আমার একমাত্র সান্ত্বনা হলো তারা আর কখনো একা থাকবে না।”

বিচারের সময় জানা যায়, পরিবারটির জন্য আগেই একজন সোশ্যাল ওয়ার্কার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তবে আগুন লাগার তিন মাস আগে সোশ্যাল ওয়ার্কার সার্ভিসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

রোজের মানসিক অবস্থার কারণে বিচারের বেশিরভাগ সময় তিনি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে বিচারে অংশ নেন। কিন্তু আদালত জানায়, মানসিক সমস্যাগুলো তার অপরাধের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।

সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট

এম.কে
২৫ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

সাক্ষাৎকার ছাড়াই প্রায় ১২০০০ জনকে আশ্রয় দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে যুক্তরাজ্যে সরকার

নিউজ ডেস্ক

ভারী তুষারপাতে যুক্তরাজ্যে জনজীবন বিপর্যস্ত

মা হারালেন বরিস জনসন

অনলাইন ডেস্ক