যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসরত এক আলবেনীয় নাগরিককে বহিষ্কার না করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারকের মতে, তাকে দেশছাড়া করলে তার অল্পবয়সী মেয়ের ওপর এর প্রভাব হবে ‘অত্যধিক কঠোর ও ক্ষতিকর’। মেয়েটির মানসিক অবস্থা ও পারিবারিক বন্ধনের শক্ত ভিত্তিই বিচারকের এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে।
৪০ বছর বয়সী এই আলবেনীয় পুরুষ পূর্বে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন, তবে ২০১৬ সালে তিনি পুনরায় অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করেন এবং তখন থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এখানে বসবাস করছেন। তার মেয়ের জন্মসনদে নাম না থাকা এবং সন্তানের মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও আদালত মনে করেন যে বাবা-মেয়ের মধ্যে বর্তমানে গভীর ও বাস্তব সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
মেয়েটি ও তার মা — উভয়েই শরণার্থী মর্যাদাপ্রাপ্ত হওয়ায় আলবেনিয়ায় ফিরে যেতে পারেন না। ফলে যদি বাবা বহিষ্কৃত হন, তবে তারা তাকে কখনও দেখতে যেতে পারবেন না। ট্রাইব্যুনালে শিশুটির মা জানান, তাদের মেয়ের কাছে বাবা ‘অপরিমেয় গুরুত্বপূর্ণ’ এবং তিনি নিয়মিত ব্যালে ক্লাস, পার্টি ও নানা কার্যক্রমে মেয়েকে নিয়ে যান। এমনকি স্কুল-সংক্রান্ত অনুষঙ্গেও তার সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে।
মেয়ের স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, বাবা বহিষ্কারের সম্ভাবনা শিশুটিকে এতটাই অস্থির করে তুলেছিল যে স্কুলকে তার জন্য নিয়মিত মানসিক সহায়তার সেশন চালু করতে হয়েছিল। ট্রাইব্যুনাল বিচারকও উল্লেখ করেন যে মেয়েটি ‘দুর্বল ও সংবেদনশীল’, আর বাবার সঙ্গে তার বর্তমান বন্ধন ভেঙে গেলে তা তার ওপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে হোম অফিস দাবি করেছিল, ২০২২ সালের আগে বাবা-মেয়ের কোনো সম্পর্কের প্রমাণ নেই। তারা আরও অভিযোগ করে যে বিচারক স্বাধীন সামাজিক কর্মীর রিপোর্ট যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেননি।
তবে আপিল বিচারক জন জোলিফ হোম অফিসের যুক্তি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, সামাজিক কর্মীর প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করা বা জেরা করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হোম অফিস নেয়নি। ফলে বিদ্যমান প্রমাণই বিচারকের জন্য যথেষ্ট ছিল। তিনি রায়ে উল্লেখ করেন, বাবার সঙ্গে যোগাযোগ হারানো শিশুর জন্য ‘ক্ষতিকর ও উল্লেখযোগ্য’ প্রভাব ফেলবে, যা আইনগতভাবে ‘অতিরিক্ত কঠোর’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ফলস্বরূপ, আদালতের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকে—আলবেনীয় ওই অভিবাসীকে যুক্তরাজ্যেই থাকতে দেওয়া হবে, মেয়ের কল্যাণের স্বার্থে।
সূত্রঃ ডেইলি মেইল
এম.কে

