একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রায় ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬ শতাংশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান ও সংখ্যা লঘু গোষ্ঠীর লোকেদের মাঝে আক্রান্তের হার বেশি।
দ্য গার্ডিয়ান সূত্রে জানা যায়, রিয়্যাক্ট-টু নামে ওই গবেষণাটি যুক্তরাজ্যের ৩১৪টি এলাকার এক লাখ লোকের উপর চালানো হয়। দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৩২ শতাংশ লোকের কোভিড-১৯ এর কোনো লক্ষণই ছিল না।
জানা যায়, প্রাপ্ত বয়স্করা ২০ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাড়িতে নিজেরাই টেস্ট করেন। ফলাফলে ভৌগলিক পার্থক্য দেখা যায়। যেমন- লন্ডনের ১৬ শতাংশ লোকের কিন্তু যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমে ১৬ শতাংশ লোকের এন্টিবডি তৈরি হয়েছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষণা দলের সদস্য প্রফেসর গ্রাহাম কুক বলেছেন, প্যানডেমিকের প্রথম ওয়েভ চলাকালীন সময়ে সংক্রমণের পরিসংখ্যান এটি। এতে এমন স্কেল ব্যবহার করা হয়েছে যা ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের মধ্যে ফলাফলে পার্থক্য নির্দেশ করতে পারে।
ড. কুকের মতে এই সমীক্ষা লকডাউন শিথীল করতে এবং সংক্রমণের দ্বিতীয় ওয়েভ প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কুক বলেন, ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যকার এই পার্থক্যের কারণ বের করতে দীর্ঘ গবেষণা করতে হবে। আমরা অসুস্থতার মাত্রা এবং অ্যান্টিবডি হওয়ার সম্ভাবনার মধ্যে একটি স্পষ্ট সম্পর্ক দেখতে পাই। অসুস্থ্য হওয়ার পর থেকে ২১ দিন পরেও হাসপাতালে ভর্তি হয়নি এমন রোগীদের পরীক্ষা করে ৮৪ শতাংশের অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছিল। এর আগে যাদের ইতিপূর্বে কোভিড -১৯ হয়েছিল তাদের সকলের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, স্কুল খোলা হলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আরও একটি গবেষণার পরিকল্পনা আছে। তবে তিনি সতর্ক করেন যে, এই অ্যান্টিবডি ভবিষ্যতের কোভিড -১৯ সংক্রমণের বিরুদ্ধে কতটুকু এবং কতদিন ধরে প্রতিরক্ষামূলক হিসেবে কাজ করবে তা স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় পোস্ট করেছে যে, যুক্তরাজ্যের প্রকাশিত আক্রান্তের সংখ্যার তুলনায় এই ৩.৪ মিলিয়ন সংখ্যাটি বহুগুণ বেশি – যা এই রোগ পর্যবেক্ষণের জন্য মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এডওয়ার্ড আরগার বলেছেন, কিভাবে ভাইরাসটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, কে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং এই রোগের বিস্তার কিভাবে ঠেকানো যাবে তা জানতে অ্যান্টিবডি নিয়ে বড় আকারের গবেষণা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
রূপান্তর: শামীমা আলম (লন্ডন)
২৩ আগস্ট ২০২০
এনএইচটি