TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে শরণার্থীদের জন্য কঠোর নিয়ম আসছেঃ ২০ বছর অপেক্ষা ছাড়া মিলবে না স্থায়ী বসবাস

যুক্তরাজ্যের হোম সেক্রেটারি শাবানা মাহমুদ বলেছেন, দেশের বর্তমান আশ্রয় ব্যবস্থা “নিয়ন্ত্রণের বাইরে” এবং এটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। এজন্য লেবার সরকার শরণার্থীদের স্থায়ী সুরক্ষা নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যা কার্যকর হলে আশ্রয়প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে।

 

প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় শরণার্থীদের প্রতি আড়াই বছর পর পর যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতির জন্য পুনরায় আবেদন করতে হবে। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত কোনো শরণার্থীর মাতৃভূমিকে যদি নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়, তবে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে। এই নীতি ডেনমার্কের বিতর্কিত আশ্রয় মডেল অনুসরণে নেওয়া হচ্ছে।

সরকার আরও জানিয়েছে, অবৈধভাবে আগত শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেতে ২০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে পাঁচ বছরের সুরক্ষা শেষে শরণার্থীরা indefinite leave to remain (স্থায়ী বসবাস)–এর জন্য আবেদন করতে পারেন, কিন্তু এই সময়সীমা কমিয়ে ৩০ মাস করা হবে এবং রিভিউ শেষে প্রয়োজন না হলে সুরক্ষা বাতিল করা হবে।

ইউক্রেন থেকে যুদ্ধের কারণে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরাও এ নীতির আওতায় পড়তে পারেন। মাহমুদ বলেন, তারা অস্থায়ী ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যে আছেন এবং যুদ্ধের অবসান হলে অধিকাংশই নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইবেন। ফলে তাদের ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

আইন ভঙ্গ করলে বা কাজ করার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আবেদনকারীদের সরকারি সহায়তা বন্ধ করা হবে। এখন পর্যন্ত আইন শরণার্থীদের বাসস্থান ও অর্থসহায়তা নিশ্চিত করে আসছিল, তবে নতুন প্রস্তাবে এটি সরকারের বিবেচনার ওপর নির্ভর করবে।

বিপজ্জনক ছোট নৌকায় সমুদ্রপথে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ কমাতে সরকার নতুন “নিরাপদ ও বৈধ রুট” চালুর পরিকল্পনা করেছে। স্থানীয় জনগণকে স্পন্সরশিপের সুযোগ দিয়ে ‘Homes for Ukraine’-এর মতো মডেলে সীমিত সংখ্যক শরণার্থীকে যুক্তরাজ্যে আনার লক্ষ্য রয়েছে। এ ছাড়াও দক্ষ শরণার্থীদের জন্য কর্মপথ খোলা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এদিকে, বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্তেও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। জননিরাপত্তা হুমকির মুখে থাকলে বিচারকরা শরণার্থীদের পারিবারিক জীবনের অধিকার বা ফেরত পাঠালে অমানবিক আচরণের ঝুঁকির বিষয়টি কম গুরুত্ব দিতে পারেন বলে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এটি শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎকে চরম অনিশ্চয়তায় ফেলতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নিষিদ্ধ ঘোষণায় সরকারের আপিল ব্যর্থ

অবাধ ও অসতর্ক যৌনতায় যুক্তরাজ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে যৌনরোগ

ব্রিটেনবাসীদের দেওয়া হচ্ছে ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’

নিউজ ডেস্ক