যুক্তরাজ্যে আট থেকে চৌদ্দ বছর বয়সী প্রতি দশজন শিশুর মধ্যে প্রায় একজন অনলাইনে পর্নোগ্রাফি দেখেছে বলে জানিয়েছে দেশটির যোগাযোগ পর্যবেক্ষক সংস্থা Ofcom। এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে ২৫ জুলাই থেকে পর্নো সাইটে বাধ্যতামূলক বয়স যাচাই ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার আগেই।
গবেষণায় দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে ৮ শতাংশ শিশু পর্নোগ্রাফি সাইট বা অ্যাপে প্রবেশ করেছে। ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছেলেরা সবচেয়ে বেশি এমন কনটেন্টে প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে দুইজন এই সাইটগুলোতে ঢুকেছে।
Ofcom জানিয়েছে, বয়স যাচাইয়ের নতুন নিয়ম না মানলে পর্নোগ্রাফি সাইটগুলোকে ১০ শতাংশ বৈশ্বিক আয়ের সমপরিমাণ জরিমানা বা যুক্তরাজ্যে ব্লক করে দেওয়া হতে পারে। Pornhub, YouPorn ও Stripchat এর মতো বড় বড় সাইট ইতোমধ্যে নিয়ম মানতে রাজি হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কেবল টিক চিহ্ন দিয়ে “আমি ১৮ বছরের বেশি” বললেই চলবে না। ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করতে হবে ফেসিয়াল এজ এস্টিমেশন, ক্রেডিট কার্ড বা মোবাইল নেটওয়ার্কের তথ্য, পাসপোর্ট মিলিয়ে সেলফি যাচাই, কিংবা ডিজিটাল আইডেন্টিটি ওয়ালেটের মাধ্যমে।
Ofcom বলছে, এই পদক্ষেপ শিশুদের জন্য অনলাইনকে নিরাপদ করতে সহায়ক হবে এবং ৮০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্রিটিশ নাগরিকও এই বয়স যাচাই ব্যবস্থাকে সমর্থন করেছেন।
এ মাসের শুরুতে কিছু ফাইল শেয়ারিং সাইটের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে Ofcom। অভিযোগ ছিল এসব প্ল্যাটফর্মে শিশু পর্নোগ্রাফি এবং অবৈধ কনটেন্ট শেয়ারের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তারা আইনি তথ্য চাওয়ার পরও জবাব দেয়নি।
Ofcom নিশ্চিত করেছে, নতুন ব্যবস্থা প্রাপ্তবয়স্কদের বৈধ কনটেন্ট দেখার অধিকার হরণ করবে না এবং সব তথ্য GDPR আইনের আওতায় সুরক্ষিত থাকবে।
অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা Care-এর নীতিনির্ধারক টিম কেয়ার্নস বলেছেন, স্কুলে যৌন হয়রানি ও সহিংস যৌন অপরাধের পেছনে পর্নোগ্রাফির একটি প্রভাব রয়েছে এবং এই পদক্ষেপ বহুদিন আগেই নেওয়া উচিত ছিল।
শিশু নিরাপত্তা দাতব্য সংস্থা NSPCC-এর নীতিনির্ধারক রানি গোবিন্দার বলেছেন, শিশুদের নিরাপদ রাখতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনই দায়িত্ব নিতে হবে এবং Ofcom যেভাবে এগোচ্ছে তা ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২৬ জুন ২০২৫