যুক্তরাজ্যে সিজারিয়ান সেকশন বা অস্ত্রোপচারমূলক প্রসবের হার ২০২৩ সালে ৫০.৬% ছাড়িয়েছে, যা গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। জাতীয় মাতৃত্ব ও প্রসূতি নির্ণয় নিরীক্ষা (NMPA) কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ সালে এই হার ছিল ২৫%। এই প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে গর্ভাবস্থায় জটিলতা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, এবং গর্ভধারণের বয়স্কতা। বিশেষজ্ঞরা জানান, এই পরিবর্তনটি মাতৃত্ব সেবার সংস্কৃতির পরিবর্তন এবং রোগীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারের প্রতি গুরুত্বারোপের ফলস্বরূপ।
সিজারিয়ান সেকশন দুই ধরনের হয়: জরুরি এবং পরিকল্পিত। ২০২৩ সালে মোট সিজারিয়ান সেকশনের মধ্যে ২৩.১% ছিল জরুরি এবং ১৬.৪% ছিল পরিকল্পিত। এই প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে গর্ভধারণের বয়সের বৃদ্ধি, স্থূলতা, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত জটিলতা। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, সিজারিয়ান সেকশন অতিরিক্ত হলে তা মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সিজারিয়ান সেকশনকে শুধুমাত্র চিকিৎসাগত প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে সুপারিশ করে। তাদের মতে, ১০-১৫% সিজারিয়ান সেকশন হার একটি দেশের জন্য আদর্শ, কারণ এর বেশি হার মা ও শিশুর মৃত্যুর হ্রাসে অতিরিক্ত কোনো উপকারিতা দেখায় না।
যুক্তরাজ্যে গর্ভধারণের হার কমে গেছে, ২০২৩ সালে এটি ১.৪৪ জন প্রতি মহিলায় নেমে এসেছে, যা ১৯৩৮ সালের পর সর্বনিম্ন। এই হ্রাসের ফলে মাতৃত্ব সেবার উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সিজারিয়ান সেকশন বৃদ্ধির পেছনে এটি একটি কারণ হতে পারে।
সামগ্রিকভাবে, যুক্তরাজ্যে সিজারিয়ান সেকশন বৃদ্ধির এই প্রবণতা স্বাস্থ্যসেবার নতুন বাস্তবতা নির্দেশ করছে। যদিও এটি কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় হতে পারে, তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অতএব, সিজারিয়ান সেকশন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্কতা এবং প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা উচিত।
সূত্রঃ বিবিসি নিউজ
এম.কে
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫