সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের পর যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি ঘোষণা করেছে যে আগামী বছরের উইমেন্স কনফারেন্সের মূল অধিবেশনে ট্রান্স নারী অংশ নিতে পারবেন না। সমতা আইনের অধীনে ‘নারী’ শব্দের সংজ্ঞায় জৈবিক লিঙ্গকে ভিত্তি করার আদালতের সিদ্ধান্তের পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী ট্রান্স নারী ফ্রিঞ্জ ইভেন্টে উপস্থিত থাকতে পারবেন, তবে মূল বিতর্ক, ভাষণ বা নীতিগত প্রস্তাবনায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে না।
আইনি জটিলতা এড়াতে এবং নারীদের স্বল্প-প্রতিনিধিত্ব ইস্যুতে দলের অবস্থান বজায় রাখতে এটিকে “সবচেয়ে কম সীমাবদ্ধ” কাঠামো হিসেবে বিবেচনা করছে লেবার। গত এপ্রিলের রায়ের পর পরামর্শ পেয়ে ২০২৫ সালের সম্মেলন বাতিল করা হয়েছিল। তখন পর্যন্ত লেবার পার্টি আত্ম-পরিচয়ের ভিত্তিতে নারী হিসেবে অংশগ্রহণের অনুমতি দিত, ফলে ট্রান্স নারীরাও সম্মেলনের কেন্দ্রীয় কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারতেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর লেবার পার্টি নিয়মাবলির ওপর একটি ‘সমন্বিত আইনি পর্যালোচনা’ চালায়। দলটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, ২০২৬ সালে সম্মেলন নতুন নীতিমালার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। তার ভাষায়, এই সিদ্ধান্ত নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার দলের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে সমতা আইন বাস্তবায়নে নতুন কোড অব প্র্যাকটিস চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। সমতা ও মানবাধিকার কমিশন (EHRC) ওই নির্দেশিকার খসড়া তিন মাস আগেই মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তবে সমতা বিষয়ক মন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন জানিয়েছেন, নির্দেশিকাটি আইনি দৃষ্টিতে নিখুঁত করতে প্রয়োজনীয় সময় নেওয়া হবে। নির্দেশিকা প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় একক-লিঙ্গের নীতিমালা বাস্তবায়নে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদায়ী EHRC প্রধান ব্যারোনেস ফকলনার।
তার অভিযোগ, বিভিন্ন সংস্থা রায়টি ভিন্নভাবে প্রয়োগ করায় দেশে “ধূসর এলাকা” তৈরি হয়েছে। তবে সরকারের বক্তব্য—তাড়াহুড়ো করে তৈরি করা নির্দেশিকা নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা “সম্পূর্ণ বিপর্যয়কর” হবে।
লেবারের ঘোষণার পাশাপাশি সপ্তাহের মধ্যে আরও দুটি বড় প্রতিষ্ঠান নতুন নিয়ম জারি করেছে। উইমেন্স ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, তারা আর ট্রান্স নারীকে সদস্যপদ দেবে না। তার আগের দিন গার্লগাইডিং ঘোষণা করে, ট্রান্স মেয়েরা আর গার্ল গাইড গ্রুপে অংশ নিতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর একক-লিঙ্গ নীতির প্রয়োগে দেশজুড়ে ধারাবাহিক পুনর্বিন্যাস চলছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে

