আইনীভাবে অভিবাসনের গতি হ্রাস করার জন্য কঠোর কিছু নিয়ম নিয়ে এসেছে যুক্তরাজ্য সরকার। যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের আবেদনের হার বিশাল হ্রাস পেয়েছে বলে জানা যায়।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা যায় কেয়ার ভিসায় আবেদনের সংখ্যার হারও হ্রাস পেয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের ডিপেন্ডেন্ট নিতে পারবে না এই নিয়ম যুক্তরাজ্য সরকার চালু করার পর আশ্চর্যজনকভাবে হ্রাস পেতে থাকে শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদনের সংখ্যা।
বছরের শুরুতেই স্বরাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লেভারলি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্যে নেট মাইগ্রেশন হ্রাস করার উদ্দেশ্যে ইমিগ্রেশন বিধিগুলিতে পরিবর্তন আনা হবে। পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যানুযায়ী ২০২২ সালে ৭,৪৫,০০০ জন মানুষ যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিল। ২০২৩ সালে এর হার কিছুটা কমে ৬,৭০,০০০ জনে পৌঁছায়।
সাধারণ নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে ভোটারদের মন জয় করতে যে তিনটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারমধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে ইমিগ্রেশন। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুনাক তার দলের অধিকারী ও ভোটারদের নিকট থেকে যুক্তরাজ্যে নেট মাইগ্রেশন কমানোর জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে স্বরাষ্ট্র সচিব সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের মধ্যে ঘোষণা করেছিলেন কেয়ার ওয়ার্কাররা আর পরিবার আনতে পারবেন না। যা চলতি বছরের ১১ মার্চ হতে কার্যকর হয়। তাছাড়া স্কিলড ওয়ার্কার তাদের পরিবার আনতে হলে নূন্যতম বেতনের প্রান্তিকতা ২৬,২০০ পাউন্ড হতে ৩৮,৭০০ পাউন্ডে উন্নীত করা হয়। বছরের শুরু হতে নতুন নিয়মগুলি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাজ্যে আসার আবেদন হ্রাস পেতে থাকে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।
সামগ্রিকভাবে, কেয়ার ভিসার আবেদন বছরের প্রথম চার মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৬% কমে গিয়েছে। যেখানে গত বছর এই সময়ে আবেদন হয়েছিল ৫০,৯০০ সেখানে এই বছরে আবেদন হয়েছে মাত্র ১২,৪০০টি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদনের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে যেখানে গতবছর ৩৮,৯০০ জন আবেদন করেছিল সেখানে এই বছর আবেদন জমা পড়ে মাত্র ৮,৩০০। যা শতকরা হিসাবে গেলে প্রায় ৭৯ ভাগ কম গত বছরের তুলনায়।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আবেদনের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে বাজেট ঘাটতি ও গবেষণা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ। যুক্তরাজ্যের শিক্ষাখাত সমূহ বিপদের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য গতকাল মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ঋষি সুনাক স্নাতক ভিসা রুটে আর কোনও মৌলিক সংস্কার করা থেকে সরে এসেছেন। যদিও তিনি ভিসা সিস্টেমের অপব্যবহারের বিষয় নিয়ে নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন বলে অবহিত করেছেন।
সূত্রঃ ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস
এম.কে
২২ মে ২০২৪