যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ লন্ডনের পেকহামে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে টেসার দিয়ে ভয় দেখানো, হাতকড়া পরানো এবং মুখে স্পিট হুড পরানোর ঘটনায় দুইজন কর্মরত ও একজন সাবেক মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে শৃঙ্খলাভিত্তিক শুনানি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের মে মাসে, যখন বৃদ্ধার কেয়ারগিভার জরুরি সহায়তার জন্য পুলিশে ফোন করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথম পুলিশ কর্মকর্তা বৃদ্ধাকে রান্নার সরঞ্জাম হাতে দেখতে পান এবং তিনি তা ফেলে দিতে বললে বৃদ্ধা অস্বীকৃতি জানান। তখন তাকে টেসার তাক করে ভয় দেখানো হয়, যদিও সেটি চালু করা হয়নি।
পরবর্তীতে আরও পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং বৃদ্ধাকে হাতকড়া পরানো হয়। পরে তিনি পুলিশ সদস্যদের দিকে থুতু ছুঁড়ে দিলে মুখে ‘স্পিট হুড’ পরিয়ে দেওয়া হয়। বৃদ্ধাকে গ্রেপ্তার না করে হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে উভয় বস্তু খুলে ফেলা হয়।
ঘটনার তদন্তে স্বাধীন পুলিশ আচরণ দপ্তর (IOPC) জানায়, এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টেসার ব্যবহার ও বৃদ্ধার সঙ্গে সংলাপ পরিচালনার ক্ষেত্রে অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে। অন্য দুই পুলিশ সদস্য—একজন বর্তমান, অন্যজন চাকুরি ছেড়েছেন—তাদের বিরুদ্ধে বৃদ্ধাকে দীর্ঘ সময় ধরে হাতকড়া ও মুখাবরণে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে তার বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনা নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বয়স, লিঙ্গ, বর্ণ ও প্রতিবন্ধিতার ভিত্তিতে বৈষম্যের অভিযোগ তোলা হয়, তবে তদন্তে বর্ণ বা লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্যের প্রমাণ মেলেনি।
ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস জানিয়েছে, তদন্ত শেষে তারা কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনবেন না। যদিও অসদাচরণের অভিযোগে শৃঙ্খলা শুনানির পথ খোলা রাখা হয়েছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই সদস্যকে সীমিত দায়িত্বে রাখা হয়েছে এবং আরও তিনজন পুলিশ সদস্যকে আচরণগত মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
IOPC-এর পরিচালক আমান্ডা রোয়ে বলেন, “এটি একটি গভীরভাবে উদ্বেগজনক ঘটনা, বিশেষ করে নারীটির শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা বিবেচনায়। তিনজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভিত্তিক শুনানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ডিটেকটিভ চিফ সুপারিনটেনডেন্ট এমা বন্ড বলেন, “ঘটনার পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করা হবে এবং আমরা শিগগিরই শুনানির আয়োজন করবো। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত নারীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি এবং সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”
শুনানির তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২০ জুন ২০২৫