যুক্তরাজ্যে অক্সানা শাহার নামের এক মায়ের করুণ কাহিনীর প্রতিবেদন দ্য গার্ডিয়ানে ছাপা হয়েছে। তিনি তার অটিস্টিক ছেলেকে দেখাশোনা করতেন, সপ্তাহে গড়ে মাত্র £১.৯২ পাউন্ড অতিরিক্ত আয় করার কারণে গত পাঁচ বছরে হিসাব করে মোট £১০,১৮০ এরও বেশি অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এই তথ্য জানিয়ে অক্সানা শাহারকে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়েছে সরকারের ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক এন্ড পেনশনস(DWP)। যা তাদের মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অক্সানা পার্ট-টাইমার হিসাবে স্কুল ডিনারে কাজ করতেন। তাছাড়া তিনি স্পোর্টস ডিরেক্ট-এ জিরো আওয়ার কন্ট্র্যাক্টে কাজ করতেন। যদিও তিনি তিন বছর DWP-এর নির্ধারিত উপার্জনের সীমার নিচে আয় করেছিলেন, কিন্তু আর্থিক উপার্জনের সীমা অতি সামান্য অতিক্রম করায় তাকে বিপুল অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
DWP-এর নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহে £১৯৬ এর চেয়ে মাত্র ১ পেন্স বেশি আয় করলেই পুরো সপ্তাহের কেয়ারারস এলাউয়েন্স ফেরত দিতে হয়। অক্সানার ক্ষেত্রে কোনো সপ্তাহে মাত্র ৩৮ পেন্স বেশি আয় হওয়াতে তাকে £৬৪.৬০ করে ফেরত দিতে বলা হচ্ছে।
এই ‘ক্লিফ-এজ’ নীতিকে অনেকেই “নিষ্ঠুর” ও “অযৌক্তিক” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় এক লাখের মতো কেয়ারার এই নিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন, যাদের অনেকেরই ২০,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত ফেরত দিতে হচ্ছে।
অক্সানার পরিবার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলেও তা প্রথমবার খারিজ হয়ে গেছে, এখন তারা দ্বিতীয় আপিলের ফলের অপেক্ষায় আছে।
অক্সানার স্বামী গাই শাহার বলেন, “এই ব্যবস্থাটি যেন পরিবারের বিরুদ্ধে একটি ফাঁদ। আমরা আশা করি এই অমানবিক নীতির সংস্কার হবে এবং আমাদের মতো পরিবারগুলো সুবিচার পাবে।”
ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক এন্ড পেনশনস(DWP) জানিয়েছে, আপিলের রায় না আসা পর্যন্ত অর্থ ফেরত আদায় স্থগিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি তারা কেয়ারারস এলাউয়েন্স ব্যবস্থার স্বাধীন পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে, যার ফলাফল এই গ্রীষ্মেই আসার কথা।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৫ মে ২০২৫