যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ঘোষণা করেছে, এখন থেকে শিক্ষাগত ও বিনিময় কর্মসূচির ভিসার আবেদনকারীদের—বিশেষ করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের—নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রোফাইলের গোপনীয়তা তুলে দিতে হবে, যাতে মার্কিন কূটনীতিকরা তাদের অনলাইন কার্যক্রম পর্যালোচনা করতে পারেন। যারা এটি করতে অস্বীকার করবে, তাদের প্রতি সন্দেহ করা হবে যে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের অনলাইন আচরণ গোপন করছে।
বুধবার প্রকাশিত নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মার্কিন কনস্যুলার কর্মকর্তারা অনলাইনে আবেদনকারীদের উপস্থিতি পর্যালোচনা করবেন, বিশেষ করে এমন কোনো ইঙ্গিত রয়েছে কি না যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা মূল নীতির প্রতি শত্রুতা পোষণ করে।
পলিটিকো-র হাতে আসা এক পৃথক নির্দেশনাতেও বলা হয়েছে, যারা বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করে এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত—তাদের চিহ্নিত করতে হবে। সেইসঙ্গে, অবৈধ ইহুদি-বিরোধী হয়রানি বা সহিংসতার প্রতি সমর্থন থাকলেও তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
এই তথাকথিত ‘ইহুদি-বিরোধী’ কার্যকলাপ যাচাইয়ের ধারা আগেও যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিবাসন বিভাগে প্রয়োগ হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এটি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনার বিরোধীদের দমন করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এই নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হবে এফ, এম ও জে শ্রেণির ভিসার জন্য—যেগুলোর মাধ্যমে একাডেমিক ও কারিগরি শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য বিদেশি নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে যায়।
একজন সিনিয়র স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তা বলেন, “মার্কিন নাগরিকদের প্রত্যাশা থাকে যে তাদের সরকার দেশকে নিরাপদ রাখতে সবকিছু করবে, এবং ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিদিন সেটাই করছে।” তিনি আরও বলেন, মার্কো রুবিও যুক্তরাষ্ট্র ও এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরও নিরাপদ করতে সহায়তা করছেন এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টকে আধুনিক যুগে নিয়ে আসছেন।
গত মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন শিক্ষা ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল, যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের নতুন কৌশল নির্ধারণ করা যায়। এছাড়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ নিয়ে চলমান উত্তেজনার কারণে চীনা শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে নজরে রাখা হচ্ছে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে কূটনৈতিক দপ্তরগুলো আবার সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ করতে পারবে, তবে এফ, এম ও জে ভিসার জন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে কঠোর ও বিস্তৃত যাচাই-বাছাই চালানো হবে।
একজন কর্মকর্তা জানান, “এই যাচাই কার্যক্রমের সুবিধার্থে, সব এফ, এম ও জে ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব প্রোফাইলের গোপনীয়তা সেটিংস ‘সবার জন্য উন্মুক্ত’ করতে বলা হবে। এই বাড়তি যাচাই নিশ্চিত করবে, যারা আমাদের দেশে আসতে চায়, তাদের প্রত্যেককে সঠিকভাবে যাচাই করা হচ্ছে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৯ জুন ২০২৫